ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বাতাসে ফলের ম-ম ঘ্রাণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৭
বাতাসে ফলের ম-ম ঘ্রাণ বাতাসে ফলের ম-ম ঘ্রাণ-ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: ঋতুর পালাবদলে বিদায় নেবে বৈশাখ। রসে টুইটম্বুর হরেক রকম বাহারি ফল অন্তত সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। চারদিকে পাকা ফলের সৌরভ বলে দিচ্ছে মধুমাস জ্যৈষ্ঠ আসন্ন। বাতাসে ম-ম করছে রসালো ফলের ঘ্রাণ।

গাঢ় সবুজ আমের গায়ে ফুটে উঠেছে ছোপ ছোপ সিঁদুরে রঙ। গাছের সবুজ পাতায় মোড়ানো ডালে ডালে ঝুলছে স্বাদের লিচু।

পেকে ওঠা লিচুর গাছ ঘিরে দিনে পাখপাখালি আর রাতে চলছে বাদুরের আনাগোনা। তবে গাছের মাথা নেটে ঘেরা থাকায় তেমন একটা সুবিধা করতে পারছে না ওরা।

দোকানির ঝুড়ির ওপর শোভা পাচ্ছে সেই লিচু। নিচটা সবুজ পাতায় ভরা। লিচু লিচুর ঝোপাগুলো হালকা সবুজের মাঝেও ছড়াচ্ছে লাল আভা। তরমুজের লাল টুকটুকে শ্বাসমূল দাত বের করে যেন হাসছে ফোকলা হাসি। মধুমাস জ্যৈষ্ঠ আসার আগেই বাহারি ফলে দোকানগুলোকে বর্ণিল ফলসম্ভারে সাজিয়ে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা।

বগুড়ার শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা, রেলওয়ে স্টেশন, রাজাবাজার, কাঁঠালতলাসহ ফলপট্টি ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিভিন্ন মোকাম থেকে বেশ আগ থেকেই হরেক রকম ফল আনা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে আম ও লিচুর পরিমাণটা তুলনামূলকভাবে বেশি। ক্রেতা সাধারণের দৃষ্টি কাড়তে ফলগুলো থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আমঅনেকেই ডালি বা ঝুড়িভর্তি ফলের পসরা সাজিয়ে রাস্তার পাশে বসে পড়েছেন। তবে ক্রেতাদের পছন্দ বা কেনাকাটার তালিকার শীর্ষে আছে নানা জাতের আম ও লিচু।

মধুমাস জ্যৈষ্ঠকে অনেকেই বলে থাকেন বাঙালির রসনাতৃপ্তির মৌসুম। হরেক ফলের স্বাদ আর রঙের ছোঁয়ায় এ মৌসুমে বাঙালি ব্যস্ত হয়ে পড়ে রসনার পরিতৃপ্তিতে।

 

পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের লেখায়ও ফুটে উঠেছে এই মধুমাসের কথা। মধুমাস জ্যৈষ্ঠ নিয়ে তার আলোচিত সেই ছড়া-কবিতা:

‘আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা ফুল তুলিতে যাই

ফুলের মালা গলায় দিয়ে মামার বাড়ি যাই

ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ

পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ।

 

তবে পল্লীকবির এই লেখার পুরো রূপ দেখতে যে আরো কিছু সময় লাগবে সেটাই বাংলানিউজকে এমনটাই জানালেন বেশ কয়েকজন ফল-ব্যবসায়ী। তরমুজআনিছুর রহমান, সামিউল ইসলাম, শাহিন শেখসহ একাধিক ফল-ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, আম ও লিচু এখনো পুরোদমে বাজারে আসা শুরু হয়নি। এজন্য আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে তরমুজ ও কাঁঠাল অনেক আগেই বাজারে এসেছে।


মূলত আম ও লিচুর ওপরই তাদের এ মৌসুমের ব্যবসা নির্ভর করে। কমবেশি সব ধরনের ক্রেতাই এসব ফল কিনে থাকেন। তবে সীমিত আকারে আম ও লিচু আসা শুরু হয়েছে।

তারা আরো জানান, বর্তমান বাজারে প্রতিকেজি গোপালভোগ ১০০-১১০টাকা, গোবিন্দভোগ ১১০-১২০টাকা, ক্ষিরসা ৯০-১০০টাকা, ভারতীয় লালমোহন ৮০-৯০টাকা, গোপালফাস ৯০-১০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আঙ্গুরকয়েক সপ্তাহ আগে ভারতীয় প্রতিকেজি আম ১৩০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এসব আম মানের দিক দিয়ে খুব একটা ভাল না। তবু ব্যবসা ধরে রাখার জন্য অন্য সবার মত বিক্রি করতে হয়। এছাড়া বিভিন্ন জাতের লিচু ২২০-২৫০ কেজি দরে বেচাকেনা হচ্ছে।


বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৭

এমবিএইচ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।