ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সব দিনই মায়ের, তবুও মা-দিবস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৭
সব দিনই মায়ের, তবুও মা-দিবস

ময়মনসিংহ: জমিরা খাতুন (ছদ্মনাম)। ভালুকা উপজেলা সমাজসেবা অফিসের মাঠকর্মী। মাস শেষে সর্বসাকুল্যে বেতন পান ৯ হাজার টাকা। কোনো ছেলে সন্তান নেই। আছে দুই মেয়ে।

বড় মেয়ে মেডিকেলে আর ছোট মেয়ে ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজে পাস করেছেন। ছোট মেয়ের গৃহশিক্ষকের খরচ মেটাতেই বেতনের পুরো টাকাই দিতে হয়।

মাছ ব্যবসায়ী স্বামীর আয় থেকে যা আসে তা দিয়েই কোনোমতে চলে তাদের সংসার। সন্তানের কারণে ভালো কাপড়, গহনা কিংবা একটু আরাম-আয়েশের চিন্তা নেই।

দু’মেয়েকে ঘিরেই তার যত স্বপ্ন। এ মায়ের সাফ কথা-‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’। তার নাড়িছেঁড়া দু’ধন মানুষ হলেই তার কষ্ট স্বার্থক।

শুধু জমিরা খাতুনই নন, এমনটি প্রতিটি মায়ের বেলাতেই। সবার কাছেই মা চিরন্তন। মা সবচেয়ে মধুর নাম। এর সাথেই সবার সম্পর্ক অকৃত্রিম। সন্তানের জন্য সবচেয়ে নি:স্বার্থ হয়ে কাজ করেন মা।

সন্তানের সব আবদার আর অভিযোগ জানানোর সবচেয়ে ভরসাস্থল হচ্ছেনও পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখানো জন্মদায়িনী। আর এ কারণেই কীনা পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ ‘মা। ’

বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক অধ্যাপক শহীদুল্লাহ খানের মতে, ‘মা’কে কোন বিশেষ দিনে বন্দি রাখা যায় না। বছরের প্রতিটি দিন-মুহুর্ত-মাস মায়ের। ’

মা দিবস এলেই ময়মনসিংহে বিভিন্ন পরিবারে শুরু হয়ে যায় ব্যস্ততা। হৃদয়ের মর্মমূল থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয় জন্মদায়িনীকে।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরের খুরশেদ আলম বিপ্লব থাকেন আমেরিকায়। দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাসী এ ব্যবসায়ীও মা-দিবসে রাত ১২টা ১ মিনিটে মা’কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুঠোফোনে।

বাংলানিউজকে বিপ্লব বলেন, ‘মা’র খোঁজ সব সময়ই নেই। তবে এ দিনটিতে তার সাথে কথা বলতে, শুভেচ্ছা জানাতে ভুলি না। ’

কিশোরগঞ্জের নারী উদ্যোক্তা ও সরকারি রোটারি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দা নাসিমা আক্তার একজন রত্নগর্ভা মা। তার তিন সন্তানের সবাই শিক্ষিত। নিজ নিজ ক্ষেত্রে সবাই সুপ্রতিষ্ঠিত। জীবনটা তার কানায় কানায় পূর্ণ।

তার চিকিৎসক মেয়ে বলেন, ‘মায়ের কাছে সন্তানরা সেই ছোট্ট শিশুই থাকে। মা’র কাছে সন্তানের কোনো বয়স নেই। মা-ই আমাদের নির্ভরতার একমাত্র স্থান। ’  

১৬’শ শতকে ইংল্যান্ডে প্রথম ‘মাদারিং সান ডে’ দিবস পালন করা হয়। ওই সময় দিবসটি  পালিত হতো মার্চে অথবা এপ্রিলের চতুর্থ রোববার। আমাদের দেশে ১৯৯৪ সালে মা দিবস প্রথম পালিত হয়। তারপর ধীরে ধীরে দিবসটির ব্যাপকতা বাড়তে থাকে।

ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় ভরিয়ে মায়ের দোয়া ও আশীর্বাদ জীবনের প্রতিটি নেই প্রয়োজন। মা শ্বাশ্বত চিরন্তন। সব আবদার-অভিযোগ শুধুই মায়ের কাছে। জয়তু মা।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭
এমএএএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।