ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ধর্ষণের ঘটনা পরিকল্পিত, জানতো সাদমান

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৭
ধর্ষণের ঘটনা পরিকল্পিত, জানতো সাদমান বনানীতে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত তিন যুবক (ফাইল ফটো)

ঢাকা: বনানীতে দ্যা রেইন ট্রি হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনা পরিকল্পিত বলে জানতে পেরেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। আর এই পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছিলেন ওই দুই তরুণীর বন্ধু সাদমান। মূলত, সাদমানই পরিকল্পিতভাবে তার দুই বন্ধু সাফাত আহমেদ ও নাইম আশরাফের হাতে ওই দুই তরুণীকে তুলে দেয়।

শনিবার (১৩ মে) তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছে, দ্যা রেইন ট্রি হোটেলের মালিকের ছেলেই ওই দু’টি কক্ষ বুকিং দিয়েছে। এই কারণে ওই রুমের ভেতর থেকে এতো চিৎকার চেচামেচি হলেও হোটেলের বয় ও দায়িত্বরতরা কেউই তাতে কর্ণপাত করেন নি।

কারণ এই দু’টি কক্ষে যারা ছিলেন তারা সবাই সম্পর্কে ওই হোটেল মালিকের ছেলে মাহিন হারুনের বন্ধু।

বনানীতে ওই হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি সাফাত ও সদমানকে গ্রেফতারের পর প্রথমদিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তারা এসব তথ্য জানিয়েছে।

আদালত আসামি সাফাত আহমেদকে ছয় দিন ও সাদমান সাকিফকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে, ধর্ষণের ঘটনার সময় দুই তরুণীর ভিডিও ফুটেজ মোবাইলে ধারণ করা হয়েছিলো বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেন, যে ভিডিওটি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি সেই ভিডিও চিত্র ধারণের বিষয়টি অস্বীকার করেছে রিমান্ডে সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ। তবে ওই ভিডিও উদ্ধারের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠানো হবে বলেও জানান তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়াও ওই দুই তরুণীর বন্ধু শাহরিয়ারকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে যে ভিডিও করতে বলেছিলো সে বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

শাহরিয়ারকে ভয় দেখানো হয়েছে যে, যদি ভিডিও না করা হয় তবে তাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করা হবে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, যেহেতু ভিডিও চিত্র ধারণের কথা উল্লেখ রয়েছে সেহেতু কোনো ভিডিও আছে কি না সেটি উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আসামিরা ধনী ও উচ্চবিত্ত পরিবারের বখাটে ছেলে। প্রায় সময় রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলের বিভিন্ন সময় তারা এ ধরণের পার্টি করে থাকেন, সেখানে একাধিক মেয়েরা উপস্থিত থাকেন। তবে এবারই প্রথম তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এসেছে।    

এ বিষয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য (উত্তর) বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, এই ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম চলছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।  

গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে গিয়েই বন্ধুদের যোগসাজশে ধর্ষণের শিকার হন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই তরুণী। ওই ঘটনায় ৪০ দিন পর শনিবার (০৬ মে) সন্ধ্যায় বনানী থানায় পাঁচ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং- ৮।

এই মামলার আসামিরা হলেন- সাদমান সাকিফ (২৪), তার বন্ধু সাফাত আহমেদ (২৬), নাঈম আশরাফ (৩০), সাফাতের ড্রাইভার বিল্লাল (২৬) ও তার দেহরক্ষী আজাদ।

এই ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও রেগনান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসাইন জনির ছেলে সাদমান সাকিফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
 
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৭
এসজেএ/এমআরএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।