স্থানীয়রা জানান, গ্রন্থাগারের পাশে সড়ক বিভাগের ওই স্থানে বড় খাল ছিল। কয়েক বছর ধরে পাবনা পৌরসভা লস্করপুরের খালটিতে বর্জ্য ফেলা শুরু করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পাবনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ডান পাশের বিশাল এ ময়লার ভাগাড়ে দলবেধে আবর্জনা ঘাটছে কাক ও কুকুরেরা। গন্ধের তীব্রতা ছড়িয়ে পড়েছে পাশেই বাগানে ঘেরা পাবনা সরকারি গণগ্রন্থাগারটিতেও।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না সিদ্দিকা মিতু বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই সহায়ক বই পড়তে সরকারি গণগ্রন্থাগারে যেতে হতো। প্রথমদিকে ভালো পরিবেশ থাকলেও এখন তা নেই। প্রবেশমুখে ময়লার স্তুপের গন্ধে ভেতরে বসা যায় না। তাই এখন আর যাই না’।
পাবনা সিটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শামসুর নাহার বর্ণা বলেন, ‘আমরা যখন শিক্ষার্থী ছিলাম, তখন এই সরকারি গ্রন্থাগারে প্রতিদিন যেতাম। এটি অনেক পুরনো এবং বইয়ে সমৃদ্ধ। বাংলাদেশের অনেক জেলায় যখন ভালো লাইব্রেরি ছিলো না, তখন পাবনার গ্রন্থাগারের কথা বলা হতো। আর এখন কোথায় এ লাইব্রেরি, অনেকেই জানেন না। কষ্ট হয়, ভালো একটি প্রতিষ্ঠানকে মানুষের চোখের আড়ালে রাখে কি কারণে? বই পড়ার প্রতি তরুণদের আগ্রহ বাড়াতে আধুনিক কর্মসূচি নেওয়া উচিত’।
গ্রন্থাগারের পাশের চায়ের দোকানদার রইচ উদ্দিন বলেন, ‘পৌরসভা এখানে ময়লা ফেলার আগে অনেক লোকজন লাইব্রেরিতে আসতেন, বই পড়তেন, আমাদের বেচা-বিক্রিও ভালো হতো। ময়লা ফেলা শুরুর পর থেকে এতো দুর্গন্ধে তেমন কেউ আসেন না। আমাদের বিক্রিও কমে গেছে’।
গণগ্রন্থাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রন্থাগারটি জেলা শহরের কিছুটা বাইরে থাকায় এমনিতেই পাঠক কম। তারপরও এ কর্মস্থলে আমি নতুন, এখনো বিষয়টি বুঝে উঠতে পারছি না। তবে আমার মনে হয়েছে, গ্রন্থাগারটি পরিকল্পনা অনুসারে সঠিক জায়গায় করা হয়নি। শহরের মধ্যে আরো একটি শতবর্ষী লাইব্রেরি থাকায় সরকারি গণগ্রন্থাগারটি এখানে করা হয়েছিল বলে শুনেছি’।
‘ময়লা-আবর্জনার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। আশা করি, খুব শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে’।
গ্রন্থাগারটিকে আরো সুন্দর ও আধুনিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পাঠের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে বলেও জানান সহকারী লাইব্রেরিয়ান আজহারুল ইসলাম।
পাবনা পৌরসভার মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু বলেন, ‘শহরের কয়েকটি জায়গায় ময়লা ফেলা হয়। পরে সেখান থেকে ময়লা স্থানান্তর করা হয়। আমি ইতোমধ্যে সেখানে ময়লা না ফেলার নির্দেশ দিয়েছি। যেহেতু অনেকদিন ময়লা ফেলা হতো, তাই অনেকেই এখনো সেখানে ময়লা ফেলছেন। তবে আমি পৌরসভার পক্ষ থেকে সেখানে পরিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছি’।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৭
এএসআর