এ কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিনেই ক্রেতাদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে টিসিবি। সকাল থেকে তীব্র রোদ উপেক্ষা করে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সাধারণ ক্রেতারা টিসিবির পণ্য কিনছেন।
মহানগরী ঘুরে দেখা গেছে, সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, লক্ষ্মীপুর মোড়, কোর্ট চত্বর, শালবাগান বাজার ও তালাইমারী এলাকার এই পাঁচটি পয়েন্টে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। রমজানের আগে এসব পয়েন্টে বাজার মূল্যের চেয়ে কিছুটা কম দামে নিত্য প্রয়োজনী পণ্য পেয়ে সাধারণ ক্রেতারা খুশি।
তীব্র রোদ-গরম উপেক্ষা করে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবির পণ্য কিনছেন। এসব পয়েন্টে চিনি (বিএসএফআইসি) ৫৫ টাকা, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল (পুষ্টি) ৮৫ টাকা, মশুর ডাল (অস্ট্রেলিয়া) ৮০ টাকা ও প্রতি কেজি ছোলা (অস্ট্রেলিয়া) ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মোট পাঁচটি পণ্য বিক্রির কথা থাকলেও পয়েন্টগুলোয় ১শ’ ২০ টাকা দরে খেজুর বিক্রি করতে দেখা যায়নি।
একজন সাধারণ ক্রেতা সর্বোচ্চ চার কেজি চিনি, তিন কেজি মশুর ডাল, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল, পাঁচ কেজি ছোলা কিনতে পারছেন। এসব নিত্য পণ্যের দাম বাজার মূল্যের চেয়ে তুলনামূলক কম।
বর্তমানে রাজশাহীর বাজারে প্রতিকেজি চিনি (দেশি) ৬৬টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১০২ টাকা, ভারতীয় মশুর ডাল ৭০, দেশি মশুর ডাল ১শ’ ৫ থেকে ১শ’ ১০টাকা আর বুট (দেশি) ৮৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে দেখা গেছে বাজার মূল্যের চেয়ে টিসিবির পণ্যমূল্য তুলনামূলকভাবে কম। খেজুর ছাড়াই একটি ট্রাকে ১৫শ’ কেজি ওজনের এই চারটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য থাকছে।
দুপুরে সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে টিসিবির পণ্য কিনতে আসা আরমান আলী বাংলানিউজকে বলেন, সামনে রোজা। আর রমজানকে সামনে রেখে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে শবেবরাতের পর থেকে নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
এই মুহূর্তে বাজার মূল্যের চেয়ে কিছুটা কম দামে টিসিবির পণ্য তাদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। তবে এর পরিমাণ আরও বেশি এবং টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা আরও বেশি হলে সবাই এর সুবিধা ভোগ করতে পারতো। শহরের মূল পয়েন্ট ছাড়াও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় এসব পণ্য পাওয়া গেলে আরও বেশি উপকার হতো। বাজারেও এর প্রভাব পড়তো বলে মন্তব্য করেন মহানগরীর এই সাধারণ ক্রেতা।
টিসিবির ট্রাকে থাকা শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম দিনেই সাড়া পড়ে গেছে। ট্রাকের সামনে লম্বা লাইন তারই প্রমাণ দিচ্ছে। তাই বেচা-কেনা ভালো হচ্ছে। তবে সাধারণ ক্রেতারা নিয়মের বাইরেও বেশি পণ্য চাইছেন।
টিসিবির রাজশাহী আঞ্চলিক অফিস প্রধান প্রতাপ কুমার বাংলানিউজকে বলেন, আজ সকাল ৯টা থেকে তাদের পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। ১৫ মে থেকে আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ক্রেতারা বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা ট্রাক থেকে ন্যায্য মূল্যে টিসিবির পণ্য কিনতে পারবেন।
সোমবার থেকে রাজশাহী মহানগরীতে পাঁচটি ও রাজশাহী বিভাগের আট জেলার প্রতিটি জেলা সদরে প্রতিদিন দুইটি করে টিসিবির ট্রাক নির্দিষ্ট এই চারটি পণ্য বিক্রি করা হবে। এছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে থাকা ডিলাররাও তাদের দোকানে টিসিবির পণ্যগুলো বিক্রি করবেন। আপাতত খেজুরের সরবরাহ নেই। তবে আগামীতে সরবরাহ পাওয়া গেলে খেজুরও বিক্রি করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতাপ কুমার জানান, সব সময়ই টিসিবির পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। তাই সব ক্রেতার চাহিদা পূরণ করা বরাবরই অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকা পর্যন্ত মহানগরীর পাঁচটি পয়েন্টে কম দামে টিসিবির পণ্য পাওয়া যাবে বলেও জানান এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৭
এসএস/এমজেএফ