ঢাকা, শনিবার, ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১, ০১ মার্চ ২০২৫, ০০ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ভোট-অনিয়মে ইসিকে তাৎক্ষণিক জানাবে পর্যবেক্ষক সংস্থা

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৭ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৭
ভোট-অনিয়মে ইসিকে তাৎক্ষণিক জানাবে পর্যবেক্ষক সংস্থা নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবন

ঢাকা: সংসদ নির্বাচনসহ যে কোনো নির্বাচনে অনিয়মের তড়িৎ খবর পেতে এবার পর্যবেক্ষক সংস্থাকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য পর্যবেক্ষক নীতিমালায় পরিবর্তনও আনছে সংস্থাটি।

সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছে ইসির জনসংযোগ শাখা। যা অনুমোদন করে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে মতামত এলে তা বিবেচনায় নিয়ে খসড়া নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, মাঠ পর্যায় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচনী অনিয়মের বিষয়ে পর্যবেক্ষকরা সরাসরি নির্বাচন কমিশনে তথ্য দেবেন। এক্ষেত্রে নির্বাচনের দিন সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কেন্দ্রীয় মনিটরিং কমিটির সঙ্গে পর্যবেক্ষকরা যোগাযোগ করবেন। এজন্য নির্দিষ্ট ফোন নম্বর, ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ও ফ্যাক্স নম্বর দেওয়া হবে তাদের।
 
বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী, পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন শেষ হলে একটি নির্দিষ্ট ছক মোতাবেক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন জমা দিয়ে থাকেন। এই নীতিটি বহাল রেখেই তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়টিও এবার যুক্ত করা হচ্ছে।

ইসির উপ-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, মাঠ পর্যায়ে ইসির নিজস্ব যে সমস্ত টিম পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়োজিত থাকে, তাদের প্রতিবেদন সঙ্গত কারণেই আসতে দেরি হয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নিতেও বিলম্ব হয়। অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না বা নেওয়া দুরূহ হয়ে ওঠে। তাই কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন পর্যবেক্ষক-নীতিমালায় এমন বিধান সংযুক্ত করতে চায়।

এদিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালায় এবার যে বিষয়টিতে জোর দেওয়ার হচ্ছে তা হলো-পর্যবেক্ষক কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার হতে পারবেন না। এছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গ সংসগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকলে তিনি পর্যবেক্ষণের অনুমতি পাবেন না। আবার এমন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সংস্থাটিকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধনও দেবে না ইসি।
 
অন্যদিকে বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা বা দূতাবাসগুলোর বাংলাদেশ কার্যালয়ে বিদেশি কর্মকর্তারা বিদেশি হিসেবে এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তারা স্থানীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে গণ্য হবেন। এক্ষেত্রে বিদেশিদের বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমাল এবং স্থানীয়দের স্থানীয় পর্যবেক্ষক নীতিমালা মেনে চলতে হবে।
আরেকটি বিষয় এবার নতুন করে সংযোজন করা হচ্ছে নীতিমালায়। আগে একটি এলাকায় (সংসদীয় আসন) অনেকগুলো পর্যবেক্ষক সংস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারতেন। সংশোধিত নতুন নীতিমালায় সে সুযোগ থাকছে না। এক্ষেত্রে একটি এলাকায় একটি সংস্থাকেই পর্যবেক্ষণের সংযোগ দেওয়া হবে।

এছাড়া পর্যবেক্ষকরা শুধু নির্বাচনী পরিস্থিতি, অনিয়মই পর্যবেক্ষণ করবেন এমন নয়। নতুন নীতিমালায় পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন কর্মকর্তা বা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার সক্ষমতা নিয়েও প্রতিবেদন দেবেন বলে বিধান আসছে।
 
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নীতিমালা চূড়ান্ত করে আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহেই পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে নিবন্ধন নেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ইসির জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান।

এক্ষেত্রে আগের তুলানায় এবার নিবন্ধন-সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে সংস্থাটি। বিশেষ করে নিবন্ধন থাকা সত্ত্বেও যারা গত দুই বছরের মধ্যে কোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেনি, তারা এবার আর নিবন্ধন পাবে না।
 
বতর্মানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংস্থা রয়েছে ১২০টি। এদের মেয়াদ শেষ হবে জুন মাসে। নতুন নিবন্ধন নীতিমালা অনুযায়ী পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনের মেয়াদ পাঁচ বছরই থাকবে।
 
** অর্ধেক পর্যবেক্ষককে বাদ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন

বাংলাদেশ সময়:...ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৭
ইইউডি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ