ঢাকা, শনিবার, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ০১ মার্চ ২০২৫, ০০ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

জব্দ স্বর্ণের বৈধ কাগজ দেখাতে পারলেন না দিলদার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৬ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৭
জব্দ স্বর্ণের বৈধ কাগজ দেখাতে পারলেন না দিলদার বুধবার শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে হাজিরা দিয়েছেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার

ঢাকা: শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আপন জুয়েলার্স থেকে জব্দকৃত স্বর্ণের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বনানী ধর্ষণকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত সাফাত আহমেদের বাবা ও আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ|

বুধবার ( ১৭ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে আপন জুয়েলার্সের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মইনুল খান।

শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, দিলদারসহ আপন জুয়েলার্সের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.মইনুল খান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক একেএম নুরুল হুদা আজাদ, যুগ্ম পরিচালক শফিউর রহমান।

জিজ্ঞাসাবাদে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ এবং তার দুই ভাই গোলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ লিখিত ও মৌখিক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

মইনুল খান বলেন, দুপুর ১২টা থেকে বিকেলে ৫টা ১০ মিনিট অবধি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদে প্রথম অভিযানে আপন জুয়েলার্সের জব্দকৃত ২৮৬ কেজি স্বর্ণ ও ৬১ গ্রাম ডায়মন্ড এবং দ্বিতীয় অভিযানে ২১১ কেজি ৪০৮ গ্রাম স্বর্ণ ও ৩৬৮ গ্রাম ডায়মন্ডের বৈধ কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি। তাদের কাছে থাকা কিছু কাগজপত্রের তথ্য দিতে পেরেছেন। এছাড়াও তারা কিছু কাগজপত্র দেখিয়েছেন যেগুলো গ্রাহকের রিপিয়ারকৃত স্বর্ণের কাগজ। তবে গ্রাহকের যদি কোনো স্বর্ণ থেকে থাকে তাহলে আমরা সসম্মানে স্বর্ণগুলো ফেরত দেব। কিন্তু গ্রাহকের স্বর্ণ বলে যদি প্রকৃত কাগজপত্র না দেখাতে পারেন তাহলে কোনো স্বর্ণই আপন জুয়েলার্সকে ফেরত দেওয়া হবে না। জব্দকৃত স্বর্ণগুলো আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আপন জুয়েলার্সের মালিকগণ আমাদের কাছে সময়ের আবেদন করেছেন। এজন্য আমরা আগামী ২৩ তারিখ তাদেরকে আবার শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে সশরীরে এসে বক্তব্য দেওয়ার জন্য সময় দিয়েছি। এরমধ্যে তারা তাদের যাবতীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে শুল্ক গোয়েন্দায় আসবেন। তবে প্রাথমিক অনুসন্ধানে শুল্ক গোয়েন্দারা যে কাজটি করেছে সেটা সফল বলে মনে হচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদেও তারা তেমন কোনো বৈধ কাগজপত্র কেন দেখাতে পারবেন না, এটা নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দাদের প্রশ্ন রয়েছে বলে জানান তিনি। আর এটি শুল্ক আইনে অপরাধ বলে বিবেচিত। ফলে আগামী ২৩ তারিখ আপন জুয়েলার্স বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারলে স্বর্ণ ও ডায়মন্ডগুলো ফেরত পাবে নয়তো আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ভীতির কিছু নেই জানিয়ে মইনুল খান আরও বলেন, আমাদের দেশে যারা স্বর্ণ ব্যবসা করেন তাদের কোনো ভীতি নেই। দেশে এখনো অনেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী আছেন যারা সততার সঙ্গে ব্যবসা করছেন। আমরা আজও স্বর্ণ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি কোনো স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ভীতির কিছু নেই।

কথা হচ্ছে, স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যদি সততার সঙ্গে ব্যবসা করেন তাহলে ভীতির প্রশ্নটি আসবে কেন। তাহলে কি স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা সততার সঙ্গে ব্যবসা করছেন না। আমরা স্বর্ণ ব্যবসায়ী বা কাউকেই হয়রানি করতে চাই না।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সংস্থার জব্দকৃত স্বর্ণগুলো নিয়মিত যেন নিলাম করা হয় এজন্য আজ (বুধবার) শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

যেখানে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সংস্থার জব্দকৃত স্বর্ণগুলো নিয়মিত অকশনে দিতে হবে যেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা সেগুলো ক্রয় করতে পারেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতিক্রমে যেকোনো সময় স্বর্ণ আমদানি করা যায়। আর বাংলাদেশে স্বর্ণ আমদানি নিষিদ্ধ কোনো পণ্য নয়। ট্যাক্স দিলেই যে কেউ স্বর্ণ আমদানি করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, মে ১৭,২০১৭
এসজে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।