বুধবার (১৭ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দিনব্যাপী টিকফার ওই সভা শেষে প্রেস বিফ্রিংয়ে বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু এ কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার।
সভায় বাংলাদেশের পক্ষে ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন শুভাশীষ বসু। যুক্তরাষ্ট্র পক্ষে সভায় অংশ নেওয়া ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি মার্ক লিনসকট। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটও এতে অংশ নেন।
বাণিজ্য সচিব বলেন, টিকফার সভায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য ও সেবার প্রবেশাধিকার সহজীকরণ, পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, টেকনোলজি ট্রান্সফার, ডিজিটাল ইকোনমি, বাংলাদেশে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্কিন বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য প্রবেশে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা হ্রাসকরণ, ওষুধ আমদানি প্রক্রিয়া স্পষ্টকরণ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও এনার্জি সেক্টরে বিনিয়োগ, চুক্তি বলবৎকরণ, সরকারি ক্রয়পদ্ধতি ও লেবার ইস্যু নিয়েও টিকফার সভায় আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা পুনরায় চালুর বিষয়ে কোনো আলাপ হয়নি বলে জানান বাণিজ্য সচিব।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা চালু ছিল। তবে পোশাকখাতে কাজের পরিবেশ মানসম্মত না থাকার অজুহাতে ২০১৩ সালে এ সুবিধা তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
বাণিজ্য সচিব বলেন, বাংলাদেশ থেকে রেডিমন্ট গার্মেন্ট পণ্য কেনার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রথম স্থান হারিয়েছে। একক দেশ হিসেবে এ স্থান এখন দখল করেছে জার্মানি। কিন্তু বাংলাদেশি পণ্য বিক্রি করে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আদায় করেছে বেশি। দুই দেশের বাণিজ্য বৈষম্য দূর করতে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব বলেন, শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে সভায় তা তুলে ধরা হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ সভাটি হয়েছে দ্বিমুখী আলোচনায়। আমরা জানতে চেয়েছি নতুন ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের বাণিজ্য নীতি কী ধরনের হতে পারে, তারা এ বিষয়ে ধারণা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ১৫-২০ বছর পরে অর্থনৈতিকভাবে কীভাবে পরিচালিত হবে তার একটা রূপরেখা এ সভায় তুলে ধরা হয়েছে বলেও জানান বাণিজ্য সচিব।
রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, এ সভা শুধু জিএসপির মত একটি বিষয় নিয়েই আলোচনার প্লাটফর্ম নয়। এখানে বাণিজ্য বৃদ্ধির সব কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সম্প্রতি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্য দেশ থেকেও কম পণ্য কিনেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৭
কেজেড/এইচএ/