পঞ্চাশোর্ধ্ব সিরাজ মিয়া কাজের সন্ধানে সুনামগঞ্জের দিরাই থেকে সিলেটে পাড়ি জমিয়েছেন প্রায় একযুগ আগে। ভাড়া থাকেন দক্ষিণ সুরমার বাবনা কমার্সিয়াল বিল্ডিং সংলগ্ন বস্তিতে।
দিনে দুই আড়াই শ’ টাকার কাঁঠাল কেনেন ব্যাপারীদের কাছ থেকে। কাঁঠালের বিচি আহরণে তাকে সহায়তা করেন স্ত্রী সাজেদা বেগম ও সন্তানরা। নুন আনতে পান্তা ফুরায় তাই সন্তানদেরও স্কুলে যাওয়া হয়ে ওঠে না।
সিরাজ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ফলের আড়তে পাইকারদের কাছ থেকে ১০ টাকা করে পচা কাঁঠাল কিনে নেই। এ কাঁঠালের বিচি রোদে শুকিয়ে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করি। এভাবে নিয়মিত পচা কাঁঠাল কিনে বিচি বিক্রি করে প্রতিদিন ৪/৫শ’ টাকা আয় হয়। তাই দিয়েই সংসার চালাই।
তবে সব দিন সমান হয় না। কোনো দিন কাঁঠাল পাওয়া যায় না। সিরাজ মিয়ার মতো আরও অনেকেই আছেন যারা বিচি বিক্রির জন্য পচা কাঠাল কেনেন।
সিরাজ মিয়ার স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, কাঁঠালের বিচি তরকারি হিসেবে রান্না করে খেতে ভারি মজা। বিশেষ করে ঝিঙে বা চিচিঙ্গা, দুন্দুলের সঙ্গে মাছ দিয়ে বা মাংস দিয়ে রান্না করে খাওয়া যায় কাঁঠালের বিচি। আর শুকনা বিচি ভাজি করেও খাওয়া যায়।
এই দম্পতি জানান, গত বছর থেকে তারা বিচি সংগ্রহ করে এভাবে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। তাদের মতো আরও অনেকে আছেন কাঁঠাল বিচি বিক্রি করে সংসার চালান।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নয়টি পচা কাঁঠাল থেকে বিচি সংগ্রহ করছে সিরাজের পরিবার। কাঁঠাল বহন ও বীজ আহরণের কাজে সাহায্য করছে তাদের সন্তানরাও। তাদের ছেলে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কাঁঠালের দিকে যদি কিছু অংশ ভালো বের হয়!
কাঁঠাল থেকে বিচি বের করে নদীর তীরে শুকাতে দেন সাজেদা বেগম। এরপর বিচিগুলি ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন সিরাজ মিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
এনইউ/আরআইএস/এমজেএফ