ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

জাগতিক মঙ্গল কামনায় কুমারী পূজা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭
জাগতিক মঙ্গল কামনায় কুমারী পূজা কুমারী দেবীর আসনে রাজশাহীর শিমুল মেমোরিয়াল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ঐদ্রিলা সরকার/ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাঅষ্টমীর পূজা চলছে বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর)। এ দিনের মূল আকর্ষণ ছিল কুমারী পূজা। সকালে জাগতিক মঙ্গল কামনার মধ্য দিয়ে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। 

মহাঅষ্টমীতে রাজশাহী মহানগরীর প্রতিটি মন্দির ও পূজামণ্ডপে ঢাকের বোল, মন্ত্র ও চণ্ডীপাঠ, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনিতে কেঁপে ওঠে। একই সঙ্গে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা অর্চনা ও পুষ্পাঞ্জলি দেন হিন্দু ধর্মালম্বীরা।

 

‘নারী ভোগ্য নয়, পূজনীয়’ দর্শন ধারণ করে রাজশাহী মহানগরীর সাগরপাড়া এলাকার ত্রি-নয়নী মন্দিরে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিথি অনুযায়ী পূজা হয়। কুমারী পূজায় অংশ নিতে মহানগরীর কুমারী কন্যাদের ঢল নামে ওই মন্দিরে। এর আগে সকাল থেকেই কুমারীরা পূজা-অর্চনার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পরে সকাল ১০টায় পূজা শুরু হয়।  

কুমারী দেবীর আসনে বসানো হয় রাজশাহীর শিমুল মেমোরিয়াল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ঐদ্রিলা সরকারকে। তার বাবার নাম মনোজ ও মায়ের নাম শ্বাশতী সরকার। হিন্দু শাস্ত্রমতে কুমারী পূজার উদ্ভব হয় কোলাসুরকে বধ করার মধ্য দিয়ে। বর্ণিত রয়েছে, কোলাসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবরা মহাকালীর শরণাপন্ন হন। সে সব দেবতাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়।

এবার পূজায় ‘কুমারী মা’ হওয়া ঐন্দ্রিলা সরকার লাল টুকটুকে বেনারসি পরে আসেন। ‘কুমারী মা’ আসনে আসার পরপরই শুরু হয় পূজার আনুষ্ঠানিকতা। শুরুতেই গঙ্গাজল ছিটিয়ে ‘কুমারী মা’কে পরিপূর্ণ শুদ্ধ করে তোলা হয়। এরপর ‘কুমারী মা’র চরণযুগল ধুয়ে তাকে বিশেষ অর্ঘ্য প্রদান করা হয়। অর্ঘ্যের শঙ্খপাত্র সাজানো হয়েছিল গঙ্গাজল, বেল পাতা, আতপ চাল, চন্দন, পুষ্প ও দুর্বাঘাস দিয়ে।

কুমারী পূজার ১৬টি উপকরণ দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতার সূত্রপাত। এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস— এই পাঁচ উপকরণে দেওয়া হয় ‘কুমারী’ মায়ের পূজা। অর্ঘ্য প্রদানের পর দেবীর গলায় পরানো হয় পুষ্পমাল্য। পূজা শেষে প্রধান পূজারি দেবীর আরতি দেন এবং তাকে প্রণাম করেন। সবশেষে পূজার মন্ত্রপাঠ করে ভক্তদের মধ্যে চরণামৃত বিতরণের মধ্য দিয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় পূজা শেষ হয়।

রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, ভক্তদের ঢল। চণ্ডীপাঠ, উলুধ্বনি, শঙ্খ, কাঁসর, ঢাকের বোলে মুখর হয়ে ওঠে পূজামণ্ডপগুলো। মণ্ডপগুলোতে ছিল কঠোর নিরাপত্তা। মহাঅষ্টমী উপলক্ষে সন্ধ্যায় পূজামণ্ডপগুলোতে রয়েছে আরতি, ভক্তিমূলক সংগীত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।