মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকালে ঘুম থেকেই বৃষ্টি দেখেছে নগরবাসী। বৃষ্টির কারণে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।
বৃষ্টি ঝরেছে অবিরল ধারায়। আর টিনের চালে যেন নৃত্য করে চলছিলো বর্ষাকন্যা। একটানা সেই বৃষ্টির ফলে উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিলো নিষ্প্রাণ হয়ে যাওয়া প্রকৃতিও। তাই বৃষ্টিস্নাত সকাল দিয়েই আজ দিন শুরু হয়েছে রাজশাহীবাসীর। এরপর এক ঝলক সূর্যের দেখা মিলে দুপুর সোয়া ২টার দিকে। কিন্তু আবারও আড়াল হয় মেঘের আনাগোনায়। সকাল থেকে মাঝারি বর্ষণে তাপমাত্রার পারদ নেমে এসেছে নিচে। এতেই স্বস্তি ফিরেছে নগরজীবনে। প্রশান্তি পেয়েছেন গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ।
এর আগে সোমবার (৯ অক্টোবর) সকালে সামান্য বৃষ্টি হলেও রোদের ঝিলিমিলিতে রাজশাহীর আকাশে আবারও মেঘ কেটে যায়। মাঝেমধ্যে রোদ মুছে গিয়ে মেঘ জমলেও তেমন বৃষ্টি হয়নি। তাই মঙ্গলবারের মুষলধার বৃষ্টি মানুষের প্রবল প্রত্যাশার সামাপ্তি ঘটিয়েছে। আকাশে মেঘ রয়েছে বৃষ্টি হচ্ছে এখনও।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৫৫মিনিট থেকে রাজশাহীতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
রাজশাহী শহর ছাড়াও আশপাশের এলাকাগুলোতে এখনও বৃষ্টি হচ্ছে। তবে দুপুরের আগে বৃষ্টির মাত্রা বাড়লেও পরে তা ধীরে ধীরে কমে আসে।
জানতে চাইলে আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে রাজশাহীসহ বিভিন্ন এলাকায়ই বৃষ্টি হচ্ছে। এ সময় বৃষ্টি স্বাভাবিক ঘটনা। সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর মাসেই সাগরে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়-টর্নেডো বেশি হয়। এ সময়ের বর্ষণের রেশ ধরেই শীত নামে ডিসেম্বরে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি কমবে এবং এ অবস্থার উন্নতি হবে। তবে মৌসুমজুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবেই।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৫৫ মিনিট থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এখনও বৃষ্টি হচ্ছে পরিমাণ আরও বাড়বে। আজ দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা দুপুর ১টায় ৯৭ শতাংশ ছিলো বলেও জানান রাজশাহীর এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।
এদিকে প্রত্যাশিত এ বৃষ্টি কৃষির জন্য অনেকটাই আশীর্বাদ বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি।
তিনি বলেন, এখন মাঠে আমন ধান আছে, বৃষ্টির খুবই প্রয়োজন। এই বৃষ্টি কৃষকের আমনের ক্ষেতে সেচের কাজ করছে। বৃষ্টির পানি পেলে ফলন ভালো পাওয়া যাবে। আর সেচ খরচ বাঁচায় কৃষকের উৎপাদন ব্যয় সাশ্রয় হবে।
তবে এই বৃষ্টি যদি একটানা ৪/৫ দিনের বেশি স্থায়ী হয় তবে রবিশস্যের কিছুটা ক্ষতি হবে। যেসব কৃষক আগাম শাক-সবজি আবাদ করছেন তাদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। যদিও এই সময় লাগাতার বর্ষণ হয়না বলেও উল্লেখ করেন, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৭
এসএস/এএটি/