ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মনু নদীর দু’টি স্থানে ভাঙন, পানিবন্দি অর্ধশতাধিক গ্রাম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
মনু নদীর দু’টি স্থানে ভাঙন, পানিবন্দি অর্ধশতাধিক গ্রাম মনু নদীর দু’টি স্থানে ভাঙন, পানিবন্দি অর্ধশতাধিক গ্রাম, ছবি: এম এ হামিদ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার টিলাগাঁও ও শরীফপুর ইউনিয়নে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মনু নদীর দু’টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মনু নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েকটি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ১৫টি পয়েন্ট।

রোববার (২২ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে টিলাগাঁও ইউপির আশ্রয়গ্রামের (লালবাগ) প্রায় ২শ’ ফুট স্থান ভেঙে গেছে।

শরীফপুর ইউপির চাতলাপুর ব্রিজ এলাকায় ৫শ’ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে।

দু’টি বাঁধ ভেঙ্গে শত শত পরিবার পানিবন্দি। মনু নদীর দু’টি স্থানে ভাঙন, পানিবন্দি অর্ধশতাধিক গ্রাম, ছবি: এম এ হামিদটিলাগাঁও ইউপি ও শরীফপুর ইউপির কয়েকটি বাড়ি পানির তোড়ে ভেঙ্গে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর ফসলি জমি।

সরেজমিন দু’টি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অসহায় মানুষজন বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।

বেড়িবাঁধে আশ্রয় নেওয়া সীমা দে কান্নাজড়িত কন্ঠে বাংলানিউজকে বলেন, ‘হঠাৎ অতিবৃষ্টি ফলে তাদের বাড়িঘর ভেঙেছে। ৪টি মেয়ে নিয়ে আমি এখন কোথায় যাবো?  ঘর থেকে মালাপত্রও সরাতেও পারিনি। ’

শরীফপুরের লালারচক এলাকার বৃদ্ধ আব্দুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘তাদের এলাকার স্লুইস গেটটির দু’বছর ধরে নাট-বল্টু নেই। এখন সেখান দিয়ে পানি প্রবেশ করে গ্রামটি প্লাবিত হচ্ছে। ’মনু নদীর দু’টি স্থানে ভাঙন, পানিবন্দি অর্ধশতাধিক গ্রাম, ছবি: এম এ হামিদশরীফপুর ইউপি চেয়ারম্যান জুনাব আলী বাংলানিউজকে জানান, ‘ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নষ্ট হয়েছে ফসলি জমি। এ পর্যন্ত কয়েকটি বাড়ি বন্যায় ভেসেছে। পানি হাজিপুর ইউনিয়ন হয়ে রাজনগরের ইউনিয়নসমূহকে প্লাবিত করবে। ,

টিলাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক বলেন, ‘তার এলাকাসহ ভাঙনে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অনেক ফসলি জমি, মাছ, পোর্ল্ট্রি ফার্ম নষ্ট হয়েছে। ’

কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তারা কোনোও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তিনি টিলাগাঁও ও শরীফপুরের দু’টি ভাঙ্গন এলাকায় শুকনো খাবারে ব্যবস্থা করেছেন বলেও জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মখলিছুর রহমান তালুকদার দু’টি স্থানে ভাঙ্গনের কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, বেড়িবাঁধের আরও ১৫টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। এলাকাগুলোতে মেরামতের জন্য টেন্ডার হয়ে ওয়ার্ক অর্ডার হয়েছে ঠিকাদাররা জামানতের টাকা দিলেই কাজ শুরু হবে। মনু নদীর দু’টি স্থানে ভাঙন, পানিবন্দি অর্ধশতাধিক গ্রাম, ছবি: এম এ হামিদস্লুইস গেইটের বিষয়ে তিনি বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে দ্রুত কাজটা করে দেওয়া হবে। এখনো মনু নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে ব্রিজের কাছ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে তিনি এলাকাগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

ধলাই নদীর পানি বেড়ে কমলগঞ্জের সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়ন থেকে রহিমপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত সবগুলো পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। মনু নদীর দু’টি স্থানে ভাঙন, পানিবন্দি অর্ধশতাধিক গ্রাম, ছবি: এম এ হামিদকমলগঞ্জ পৌরসভার আলেপুর গ্রামের ও আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের নতুন ভাঙ্গন ও ইসলামপুর ইউপির শ্রীপুর,মাধবপুর ইউনিয়নের শিমুলতলা,বাঘবাড়ি, গোবিন্দ বাড়ি ও মাঝেরগাঁও ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ গ্রাম এলাকার ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরাতন ভাঙ্গন দিয়ে নেমে আসা উজানের ঢলের পানি প্রবেশ করে ব্যাপক এলাকার ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট নিমজ্জিত করে।

কমলগঞ্জ-আদমপুর-কুরমা সড়কের শ্রীপুর ও তিলকপুর এলাকার প্রায় দুই কিঃমিঃ সড়ক দেড় ফুট পরিমাণ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।