রাতে কিছু জেলে নদীতে নামলেও সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকালের মধ্যে নিয়মিত মাছ শিকারে ফের ব্যস্ত হচ্ছেন সকল জেলে।
নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বরিশালের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, বাজার, বরফকলগুলোও তাদের শেষ প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে, কর্মমুখর হয়ে উঠছে সেগুলোও।
সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন পরে নদীতে নামাকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশে বাধভাঙা উচ্ছ্বাস চলছে জেলে পরিবার, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট লাখো মানুষের মাঝে।
তবে রাত ১২টার ১ মিনিট আগেও নদীতে মাছ শিকারে নামতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
নিষেধাজ্ঞার শেষদিনেও তাই নদী ও জেলেদের কঠোর নজরদারিতে রেখেছেন মৎস্য বিভাগ, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা।
জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা ড. তপন কুমার পাল জানান, গত ২২ দিনে বরিশালের সন্ধ্যা, কীর্তনখোলা, কালাবদর, আড়িয়াল খাঁ, মেঘনাসহ বেশকিছু নদ-নদীতে কঠোর নজরদারি ও অভিযান চালানো হয়, যা রোববার মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে। কিছু অসাধু ব্যক্তি গোপনে ইলিশ শিকারে গিয়ে আটক হয়ে জেল-জরিমানার শিকারও হয়েছেন।
তার দাবি, এবার নদীতে বিপুল পরিমাণে মাছ থাকায় অনেক জায়গার জেলেরা বেপরোয়া ছিলেন। তাদের প্রতিরোধে গিয়ে বানারীপাড়া ও মুলাদীতে আভিযানিক দল হামলার শিকারও হয়েছেন। তারপরও অর্পিত দায়িত্ব পালনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মৎস্য বিভাগ।
মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস রাত ৮টায় বাংলানিউজকে জানান, মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগে কেউ মাছ শিকারে নদীতে নামতে পারবেন না। অসাধু জেলেদের রুখতে তিনিসহ সকল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এখনো নদীতে রয়েছেন।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে রাতেই বরিশাল জেলার বিভিন্ন নদীতে মাছ শিকারে নামবেন জেলেরা। সোমবার সকালে বাজারে ইলিশ উঠতে শুরু করবে। তবে জেলার বিভিন্ন বাজার পরিদর্শনে যাবেন মৎস্য কর্মকর্তারা। মজুদ করা কোনো মাছ পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশালের আদর্শ গ্রামের জেলে বাবুল জানান, তাদের গ্রামের কয়েকশ’ জেলে পরিবার কয়েকদিন আগে থেকেই সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। জাল-নৌকাসহ সবকিছু মেরামতও করা হয়ে গেছে। বড় নৌকার জেলেদের সহযোগীরাও এসে পড়েছেন।
তবে নিষেধাজ্ঞার সময় নিয়ে দ্বিমত জানিয়ে জেলে মোস্তফা বলেন, জেলেদের সঙ্গে আলোচনা না করেই ইলিশের প্রজনন মৌসুম নির্ধারণ করে মৎস্য অফিস। কিন্তু গত বছর নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে নেমে জেলেরা যেমন ডিমওয়ালা ইলিশ পেয়েছেন, এবারও তার কমতি হবে না। তবে যাই হোক, রাতেই মাছ শিকারে নদীতে নামছেন তারা।
জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় ৭৪ হাজার, যার মধ্যে ইলিশ শিকারি জেলেই রয়েছেন ৪৯ হাজার। তাদের মধ্যে প্রায় ৭২ হাজার জেলে চারমাস আর প্রায় ৪৫ হাজার জেলে মা ইলিশ রক্ষার সময় সহায়তা পান।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘন্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
এমএস/এএসআর