নিষেধাজ্ঞা শেষে এখন উৎসবমুখর পরিবেশে নৌকা-জাল নিয়ে পদ্মায় নেমে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরছেন ওই জেলেরা।
রূপালী ইলিশে হাসছে তাই মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পদ্মাচরের জেলেদের জালও।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সরেজমিনে গেলে পদ্মার চরাঞ্চলের জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর সোমবার (২৩ অক্টোবর) ভোর থেকে পদ্মায় নামেন তারা। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জাল ভরে উঠতে থাকে ইলিশে। এ ধারা এখনও চলছে।
তারা বলেন, ‘জেলার হাট-বাজারগুলোতে আমাদের এখানকার পদ্মার ইলিশ খুব একটা পাওয়া যেতো না আগে, চাঁদপুর-বরিশাল অঞ্চল থেকে আসতো। পদ্মার এই অঞ্চলে যে ইলিশ ধরা পড়তো, সেগুলোও মুন্সীগঞ্জের মাওয়াসহ রাজধানী ঢাকার দিকে চলে যেতো। গত বছর থেকে পদ্মা নদীর শিবচর অংশে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে’।
‘চলতি মৌসুমের প্রথম দিন থেকেই যে পরিমাণ পদ্মার ইলিশ দেখা যাচ্ছে, তাতে এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে অন্য অঞ্চলগুলোতেও বিক্রি করা যাবে। আর পদ্মার ইলিশ অন্যরকম সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদাও অনেক বেশি’।
জেলেরা আরও জানান, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ইলিশ ধরলেও ভোররাতে জালে বেশি ধরা পড়ছে। সকালে পাইকারি ব্যবসায়ীরা পদ্মার পাড় থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক সাধারণ ক্রেতাও তাজা ইলিশ কিনতে খুব ভোরে চলে আসছেন। সরাসরি জাল থেকে ছাড়ানো মাছও তারা খুচরা দামে কিনতে পারছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে এই প্রজনন মৌসুমের কিছুদিন ডিমঅলা মা ইলিশ ধরা বন্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপসহ জেলেদেরও সচেতন করা হচ্ছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী সময়ে প্রচুর ধরা পড়ায় স্থানীয় হাট-বাজারে থাকে ইলিশের ছড়াছড়ি। দামও তুলনামূলকভাবে অনেক কম হচ্ছে।
মাছের পাইকারি বিক্রেতা সুশীল বাড়ৈ বলেন, ‘পদ্মায় বেশি ধরা পড়ায় ইলিশের দামও কম। আমরা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে তুলনামূলক কম দামেই বিক্রি করছি। সাধারণ মানুষও কম দামে ইলিশ কিনতে পারছেন’।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, সোমবার থেকেই বিভিন্ন হাট-বাজার দখল করে নিয়েছে ইলিশ মাছ। বেশি আসায় কমে গেছে দামও।
মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা উত্তম কুমার ভদ্র বলেন, ‘নিষিদ্ধের মৌসুমে আমরা এ এলাকার পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে সার্বক্ষণিক নজরদারি ও অভিযান চালিয়ে ইলিশ ধরা বন্ধ রেখেছি। যার ফলেই এখন নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। দামও একেবারে কম’।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
এএসআর