আর এই অর্থের উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন রাখায় সুভাষ চন্দ্র সাহা এবং তার স্ত্রী রীনা চৌধুরী মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মঙ্গলবার ( ২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বংশাল থানায় দুদকের ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ বাদি হয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।
সুভাস চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রীনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে কমিশন গত ১১ সেপ্টেম্বর মামলার অনুমোদন দেন।
দুদকের দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ আছে, সুভাস চন্দ্র সাহার গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার রাধানগর গ্রামে। বাবা মৃত সূর্য কান্ত সাহা ও মাতা মৃত তরুলতা সাহা। সুভাস চন্দ্র সাহা পুলিশ বিভাগে চাকরি করাকালীন বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ তার ও স্ত্রীর নামে যৌথ একানউন্টে ওয়ান ব্যাংকের রাজধানীর বংশাল শাখা, এলিফ্যান্ট রোড শাখা ও যশোর শাখার এফডিআর হিসাবে পাওয়া গেছে। যেখানে রাজধানীর বংশাল শাখায় ৬টি এফডিআর হিসাবে জমাকৃত ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বিপরীতে সুদসহ বর্তমান ২ কোটি ৮১ লাখ ১৪ হাজার ৪৬৭ টাকা।
এছাড়া এলিফ্যান্ট রোড শাখার ১টি এফডিআর হিসাবে জমাকৃত ১৮ লাখ টাকার বিপরীতে সুদসহ বর্তমান স্থিতি ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৪২ টাকা।
অপরদিকে ওয়ান ব্যাংকের যশোর শাখার ১২টি এফডিআর হিসেবে জমাকৃত ৫ কোটি ৪ লাখ টাকার বিপরীতে সুদসহ বর্তমান স্থিতি ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ৮৫৮।
মোট ১৯টি এফডিআর হিসাবে জমাকৃত ৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বিপরীতে সুদসহ বর্তমানে টাকার পরিমাণ ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকা। আর ২০১৩ সালের ২৬ মে থেকে ২০১৭ সালের ২২ মে এই এফডিআরগুলো খোলেন সুভাষ চন্দ্র সাহ।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসামি সুভাষ চন্দ্র সাহা খুলনা কর অঞ্চলের সার্কেল ১৮ কুষ্টিয়ার আয়কর নথি, যার ই-টিআইএন: ২৬৭৮৪০৫৫৪০২৪ (টিআইএন: ৪২৭-১১৯-৬০৮২)। স্ত্রী রীনা চৌধুরীও খুলনা কর অঞ্চলের সার্কেল ১৮ কুষ্টিয়ায় আয়কর নথি খোলেন। যার ই-টিআইএন: ৫৩৮২৬৩৩৯৮৩২৭ (টিআইএন: ১৯০-১০৪-৬০৯৪)। তবে তাদের যৌথ এফডিআরের মধ্যে ২০১৬-২০১৭ করবর্ষ পর্যন্ত অর্জিত এফডিআর সমূহের স্থিতি ও তা অর্জনের উৎসের বিষয়টি ২০১৬-২০১৭ করবর্ষ পর্যন্ত দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেননি।
এমনকি ২০১৬-২০১৭ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের পরে খোলা এফডিআর হিসাব সমূহেও জমাকৃত টাকার সমপরিমাণ টাকা ২০১৬-২০১৭ করবর্ষের দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নেও উল্লেখ করেননি। অর্থাৎ সুভাষ চন্দ্র সাহা পুলিশ বিভাগে চাকরিকালীন বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকার উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করেছেন।
এমনকি সুভাষ চন্দ্র সাহার স্ত্রী রীনা চৌধুরী অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ জেনেও স্বামীর সঙ্গে যৌথনামে এফডিআর হিসেবে জমা রাখার তথ্য গোপন করে অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেছেন বলে দুদকের এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
এসজেএ/আরএ/বিএস