এ লক্ষ্যে নৌপরিবহন অধিদফতর ও কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী বাতিঘর নির্মাণের বিষয়ে জানান।
চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে নৌ-পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমোডর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম এবং কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংকের পক্ষে তাদের ঢাকা অফিসের প্রতিনিধি মিস্টার কিং ইয়াংগু এবং এলজি-সামি কনসোর্টিয়াম লিমিডেটের ভাইস প্রেসিডেন্ট মিস্টার জিয়ং ওউন ইয়োল সই করেন। এ সময় নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব জিএমডি এসএস অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম’ প্রকল্পের বিষয়ে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি সই হয়। সংক্ষেপে এ প্রকল্প ‘ইজিআইএমএনএস’ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এ প্রকল্পের জন্য ৮৮ দশমিক ১৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে। ঋণের সুদের হার ০.০১ শতাংশ। আর প্রকল্প সাহায্য হিসেবে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক দেবে ২৮২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে।
প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অত্যাধুনিক কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারসহ সাতটি উপকূলীয় অঞ্চলে (কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, কুতুবদিয়া, নিঝুম দ্বীপ, ঢালচর, দুবলারচর, কুয়াকাটা) কোস্টাল রেডিও স্টেশন ও বাতিঘর নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের উপকূলে নৌ-নিরাপত্তা ব্যবস্থা, নেভিগেশনাল সহায়তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন এবং পরিচালনা করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সমুদ্রপথে দেশি-বিদেশি জাহাজগুলোর সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ স্থাপন সহজ হবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে যথাসময়ে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন না হলে আইএমও’র হোয়াইট লিস্ট থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে বাংলাদেশের সমুদ্রপথে আমদানি করা প্রায় ৯৩ শতাংশ বাণিজ্য ব্যাহত হওয়াসহ বাংলাদেশের অর্থনীতির চলমান গতিশীলতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আইএমও’র আবশ্যকীয় চাহিদার বাধ্যবাধকতার কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়া জরুরি।
তিনি আরও বলেন, আমার উপস্থিতিতে চুক্তি সই হলো। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
মন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে তিনটি বাতিঘর রয়েছে। কুতুবদিয়ায় ১৮৪৬ সালে প্রথম বাতিঘর স্থাপন করা হয়। কক্সবাজারে ও সেন্টমার্টিনে ১৯৭৬ সালে স্থাপন করা হয় বাকি দু'টি। এগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। চুক্তি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে বাতিঘর হবে সাতটি।
বাংলাদেশ ১৯৭৬ সালে আইএমও’র সদস্যপদ লাভ করে। বাংলাদেশ আইএমও’র সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার সময় থেকে আন্তর্জাতিক নৌ-অঙ্গনে দেশের স্বার্থ সংরক্ষণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে আসছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সমুদ্রের যেকোনো স্থানে জাহাজ বিপদগ্রস্ত হলে জিএমডিএসএস সিস্টেমের মাধ্যমে জাহাজের অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
এসএম/এএ