শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন রতিশ সাঁওতালের পরিবার।
পেশায় দিনমজুর রতিশ সাঁওতাল সংবাদ সম্মেলনে জানান, তিনি স্ত্রী ও ২ কন্যা নিয়ে বালিশিরা পাহাড় মৌজার রাধানাথ গ্রামে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন অর্পিত সম্পত্তিতে বংশপরস্পরায় বসবাস করে আসছিলেন।
আব্দুল মতিনের লোকজন পরিবারটিকে মারপিট করে, টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে বলে জানান রতিশ সাঁওতালের মেয়ে সুমী সাঁওতাল।
সুমী সাঁওতালের মা নিয়তি সাঁওতাল বলেন, “গোসল করে আইয়া কাপড় পরতে আছিলাম। তখন মেয়ে দুইটা ঘরে রান্না করতে আছিল। আমি কাপড় বদলানোর সময় আইয়া হেরা আক্রমণ করছে। ৩০/৩৫ জন ছিল। ”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, একই গ্রামের রাম প্রসাদ কৈরী (৭০), রাজরাম পাশী (৬৫), সত্য গোয়ালা (৭৫), সুদর্শন বাউড়ি (৪৮), সিতারাম ভর (৪৫), অযোদ্ধা রুদ্র পাল (৬১) দীন সাঁওতাল (৭৫)।
সংবাদ সম্মেলনে রাম প্রসাদ কৈরী বলেন, “মতিন ৪/৫ দিন আগে আমাকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে যায়। তখন তার সাথে ছিল সত্যবান বাউরি। ১০ হাজার টাকাও দেয় আমার হাতে। ঝামেলা দেখে জানের ভয়ে টাকা ফেরৎ দেই। ”
রাজরাম পাশী বলেন, এরশাদ সরকারের আমল থেকে আব্দুল মতিন আমাদের হিন্দুদের, প্রতিবেশীদের অত্যাচার করছে। একটা বসতভিটা দখল করে বিক্রি করে, আবার আরেকটা দখল করে। তার কারণে রাম প্রসাদসহ আরো অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। ”
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, আব্দুল মতিনের আতঙ্কে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়েছে ৭টি সাঁওতাল পরিবার। তাদের মামলা হামলায় নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার। এর মধ্যে ভূপেশ মুন্ডা, কৃষ্ণ মুন্ডা, রাম জনম ভর, জুগেশ মুন্ডা, সুভাষ ভর ও সনছড়া মুন্ডা ভারতে পালিয়ে গেছেন। এছাড়া দুর্গা প্রসাদ কৈরী সুরমা চা বাগানে ও জয়রাম কৈরী ফুলছড়া বাগানে পালিয়ে যান।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আব্দুল মতিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট।
২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি ওই জমির ভোগদখলস্বত্ব রতিশ সাঁওতালের বাবা উদয় সাঁওতালের কাছ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যে কিনে নিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। প্রভাশালী মহলের ইন্ধনে রতিশ এই জমি নিয়ে কিছুদিন পরপর হাঙ্গামা বাধাচ্ছে বলেও দাবি করেন আব্দুল মতিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘন্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৭
বিবিবি/এমজেএফ