ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

স্মৃতির কারাগার ঘুরলেন রাষ্ট্রপতি, নৌভ্রমণ করলেন পদ্মায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৭
স্মৃতির কারাগার ঘুরলেন রাষ্ট্রপতি, নৌভ্রমণ করলেন পদ্মায় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

রাজশাহী: জিয়াউর রহমানের শাসনামলে রাজবন্দি হিসেবে যে কারাগারে সাত মাস বন্দি ছিলেন, ৪০ বছর পর  সেই রাজশাহী জেলা কারাগার পরিদর্শন করলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। একইসঙ্গে নৌভ্রমণ করলে পদ্মা নদীতেও।

দুই দিনের সফরে বুধবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রপতি ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে রাজশাহী পৌঁছান। বিকেলে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যান তিনি, পরে নৌ ভ্রমণ করেন পদ্মায়।


 
রাষ্ট্রপতি কারাগার পরিদর্শনে পৌঁছালে কারারক্ষীদের একটি দল তাকে গার্ড অব অনার দেয়। পরে তিনি তার সাত মাসের রাজশাহী কারাজীবনে কাটানো ৮ নম্বর ডিভিশন ওয়ার্ড (বর্তমান নাম মহানন্দা ওয়ার্ড) ঘুরে দেখেন। পাশাপাশি ‘২০ সেল’ ও ‘কনডেম সেল’ ঘুরে দেখেন রাষ্ট্রপতি। ‘২০  সেলে’ ভয়ঙ্কর কয়েদীদের রাখা হয় বলে কারা কর্মকর্তারা জানান। কনডেম সেলে রাখা হয় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতদের।
 
ডিভিশন ওয়ার্ড পরিদর্শনকালে সহবন্দি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবদুল জলিল, সাবেক  নেতা প্রয়াত সরদার আমজাদ হোসেনসহ অন্যদের নিয়ে স্মৃতির কথা বলেন আবদুল হামিদ। তিনি জানান, শাস্তিস্বরূপ তৎকালীন জেল কর্তৃপক্ষ তাকে চার দিন চার নম্বর কনডেম সেলে আটক রেখেছিল।  
কারাগার পরিদর্শনের পর নৌভ্রমণ করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদরাজশাহী কারাগারে ঢোকা ও বের হওয়ার সময় জেলের নিয়ম অনুযায়ী ‘এন্ট্রি বুকে’ সই করেন রাষ্ট্রপতি। পরে পরিদর্শন বইতেও সই করেন তিনি। কারাগারের ডিভিশন ওয়ার্ডের সামনে একটি বেল গাছের চারা রোপণ করেন রাষ্ট্রপতি।  

এ সময় উপস্থিত সবাইকে আবদুল হামিদ জানান, তিনি বন্দি থাকার সময়ও সেখানে একটি বেল গাছ ছিল।  

ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া আবদুল হামিদ পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৬-৭৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন জেলার কারাগারে বন্দি ছিলেন। জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে ১৯৭৭ সালের মে মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রাজবন্দি হিসেবে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন তিনি। পাশাপাশি তাকে ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, রাজশাহী এবং ঢাকার কারাগারেও থাকতে হয়েছিল। পাকিস্তান আমলেও দুইবার কারাগারে যেতে হয়েছিল আবদুল হামিদকে।  

কারাগার ঘুরে রাষ্ট্রপতি রাজশাহীর ‘টি-বাঁধ’ পরিদর্শন করেন এবং পদ্মা নদীতে কিছু সময় নৌভ্রমণে যান। বিকেলের নরম হাওয়ায় নৌভ্রমণ শেষে রাত্রিযাপনের উদ্দেশে রাজশাহী সেনানিবাসে যান আবদুল হামিদ। তিনি রাজশাহী সেনানিবাসে পৌঁছালে সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক তাকে স্বাগত জানান। সেনানিবাসে রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেয় প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের একটি চৌকস দল।

রাজশাহী সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সেনানিবাসে ১ প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়নকে ‘ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা)’ প্রদান উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৭
এসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।