খুলনা মহানগরীর খালিশপুরে তিতুমীর নৌ ঘাঁটিতে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবদুল হামিদ এই জাহাজ ও টাগবোটের কমিশনিং করবেন। জাহাজ দু’টি সংযুক্তির মধ্য দিয়ে সমুদ্র সীমানার নিরাপত্তা, সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পাবে।
কমিশনিং উপলক্ষে তিতুমীর নৌ ঘাঁটি ও খুলনা শিপইয়ার্ড সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।
দেশে প্রথমবারের মতো অত্যাধুনিক বড় যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণে সফলতা অর্জন করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড। মাত্র দুই বছরে চীনের কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য দুটি লার্জ পেট্রোল ক্রাফট (এলপিসি) নির্মাণ করেছে সংস্থাটি। আর্ন্তজাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে দেশের মাটিতে বড় যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ এটিই প্রথম। ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম, ৬৪ দশমিক ২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯ মিটার প্রস্থের বিএন নিশান ও দুর্গম নামে যুদ্ধ জাহাজ দু’টিতে রয়েছে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। শত্রু সাবমেরিন শনাক্ত ও টরপেডো নিক্ষেপ করতে সক্ষম এই জাহাজ দুটি।
খুলনা শিপইয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মৃতপ্রায় খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারপর ক্রমান্বয়ে ২০১৩ সালে পাঁচটি ছোট পেট্রোল ক্রাফট তৈরি করে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে সরকারি এ সংস্থা। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ২০১৪ সালের ৩০ জুন নৌবাহিনীর জন্য দুটি লার্জ পেট্রোল ক্রাফট বা বড় যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হয় খুলনা শিপইয়ার্ড। ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দেশে প্রথমবারের মত এই বড় যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের যুদ্ধজাহাজ বিশেষজ্ঞদের কারিগরি সহায়তায় দুই বছরের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ও দক্ষ ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিকমান বজায রেখে বড় যুদ্ধ জাহাজ দুটি নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। জাহাজ দু’টি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৮শ’ কোটি টাকা।
খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর আনিছুর রহমান মোল্লা জানান, রাষ্ট্রপতি দুপুর ১২টায় নৌবাহিনীতে ২টি জাহাজ ও ২টি টাগবোটের কমিশনিং করবেন। এছাড়া তিনি জাহাজ দুটি ঘুরে দেখবেন। এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
শিপইয়ার্ডের ডিজিএম কমান্ডার এম আর রাশেদ জানান, এই জাহাজের লাইফ টাইম ২৫ বছর। প্রতিটি জাহাজে ৭৬ দশমিক ২ মিলিমিটারের একটি গান, ৩০ মিলিমিটারের একটি গান ও ২টি করে টর্পেডো লঞ্চার রয়েছে। এছাড়া রয়েছে ২টি নেভিগেশন রাডার, একটি এয়ার অ্যান্ড সারফেস রাডার, একটি ট্র্যাকিং রাডার ও একটি সোনার (sonar)।
তিনি আরো বলেন, যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ আমাদের দেশের জন্য গৌরবের বিষয়। আরো অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলে দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও ভবিষ্যতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০১৭
এমআরএম/জেডএম