শনিবার (১০ মার্চ) সকালে শার্শা উপজেলাধীন নাভরণ-সাতক্ষীরা সড়কের বাঁগআচড়া বাজারে ট্রাকের চাপায় প্রাণ হারানো দুই বোনকে নিয়ে বাংলানিউজকে এসব কথা বলছিলেন বাঁগআচড়া সম্মিলিত গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, নাভরণ-সাতক্ষীরা মহাসড়কে চালকদের অসতর্কতায় প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে।
এ দুই জনকে হারিয়ে স্বজনরা যেমন বাকরুদ্ধ, তেমনি মর্মাহত তাদের স্কুলের সহপাঠী ও শিক্ষকরাও। অসময়ে এ বিদায় কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না কেউ। তাদের চলে যাওয়া কাঁদাচ্ছে গোটা গ্রামবাসীকে।
এদিকে দুই ছাত্রী নিহতের ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে এলাকার সব স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়। শিক্ষক ও ছাত্রীরা ছুটে যায় দুর্ঘটনাস্থলে। ট্রাকের চাপায় রোজার শরীর এমন ভাবে পিষে গিয়েছিল যে চেনার কোনো উপায় ছিলনা। তাই স্বজনরা তার মরদেহের পাশে পুরনো ছবি রেখে দেয়। জেরিনের শরীরও ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায় এ দুর্ঘটনায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নাভরণ-সাতক্ষীরা মহাসড়কের সাতমাইলে রাস্তার দুই ধারে গরুর হাট থাকায় এখানে সবসময় যানজট লেগে থাকে। এছাড়া রাস্তাটিও খুব সরু। বড় যানবাহনগুলো সাইড দিতে চায়না। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা বিরাজ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারী নেই। ফলে বেড়ে চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা।
শার্শার বাঁগআচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াজ কবীর বকুল বলেন, এ এলাকাতে ফুটপাত দখল করে বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠায় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে বার বার বলা হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শনিবার সকালে বাঁগআচড়া কলেজের প্রভাষক আলমগীর কবীর তার মেয়ে রোজা ও ভাগনি জেরিনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে স্কুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা হন। পরে বাঁগআচড়া বাজারে পৌঁছালে নাভরণ থেকে ছেড়ে আসা একটি বালু ভর্তি ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই ওই দুই শিক্ষার্থীর মত্যু হয়। প্রভাষক আলমকে স্থানীয় জনগণ অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক। পুলিশ ঘাতক ট্রাকটি আটক করতে পারলেও, এর চালক পালিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
এজেডএইচ/এনএইচটি