সোমবার (১২ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে ফায়ার সার্ভিসের ২১টি ইউনিটের প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল পৌনে ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বস্তিতে ঢোকার পথে ইটের স্তুপ ও ভ্যান থাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে দেরি হয়, যে কারণে আগুন নেভাতে বেশি সময় লাগে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশনস) মেজর শাকিল নেওয়াজ আগুন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে এসে কাজ শুরু করেন দমকলকর্মীরা। তবে বস্তির গলি সরু হওয়ায় পানিবাহী গাড়ি প্রবেশে সমস্যা হয়। সবগুলো ঘর লাগোয়া হওয়ায় এবং বাতাসের তীব্রতার কারণে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
বস্তিবাসীরা জানান, প্রবেশপথে বাড়ি তৈরির জন্য আনা ইটের স্তুপ এবং ভ্যানগাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে দেরি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বস্তির উত্তর পাশে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। দমকা বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত বস্তির দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয়দের তৎপরতায় পূর্ব দিকের কিছু ঘর রক্ষা পায়।
আগুনে সর্বস্ব হারানো ঋতু আক্তার বলেন, সাহেবরা বাড়ি বানাইবো, ইট আইনা রাখছে রাস্তায়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি তিনবার আইসা ফেরত গেছে। সময়মত গাড়ি ঢুকতে পারলে আমার ঘরডা পুড়তো না। সাহেবরা ঘর বানাইবো, এহন আমার সব পুইড়া গেল। আমারে কে দিব এই ক্ষতিপূরণ?
আহাজারি করে তিনি বলেন, তিন মাস হইছে আমি ক্যান্সার থেইক্কা উঠছি। আমার তিনডা ঘর, কত জিনিসপত্র। কিচ্ছু রক্ষা করতে পারলাম না। পোলা-মাইয়া লইয়া কোনোমতে এক কাপড়ে বাইর হইয়া আইছি। আমার দুইডা সেলাই মেশিন, মাইয়ারা মেশিন চালাইয়া খাইতো। এহন আমার কি হইব?
সত্তরোর্ধ্ব আমেনা বলেন, ঘুমের মধ্যে আছিলাম। আগুন আগুন চিল্লানী হুইনা ৪ নাতি লইয়া বাইর হইছি। মুহূর্তের মইধ্যে সব শেষ হইয়া গেল।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৭০ বিঘা জমির ওপর এই বস্তি। এখানে প্রায় ৭-৮ হাজার টিনের ও কাঠের তৈরি ঘর ছিল। এ বস্তিতে ২৫ হাজার বাসিন্দা বসবাস করে।
প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
** মিরপুরে বস্তিতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ছে ২ হাজার ঘর
** মিরপুরে বস্তিতে ভয়াবহ আগুন
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৮/আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা
পিএম/আরএ