বুধবার (২১ মার্চ) রাজধানীর গুলশানের স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে ‘তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের অবস্থা ও অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যায়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহমুদুল এইচ হাসান।
ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রামের ৭৭০জন শ্রমিকের ওপর এই জরিপ করা হয়।
‘গার্মেন্ট ওয়ারকার অ্যান্ড রাইট’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে বলা হয়, মাতৃত্বকালে ঢাকার শ্রমিকদের ১৭ দশমিক ২০ এবং গাজীপুরে ৮২ দশমিক ০৮ শতাংশ চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রামের ১৩ দশমিক ৮০ এবং নারায়ণগঞ্জের ৮৬ দশমিক ২০ শতাংশ নারীকে মাতৃত্বকালে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এছাড়া কিছু প্রতিষ্ঠানে মাতৃত্বকালীন ছুটি দিলেও ভাতা দেওয়া হয় না। উল্টো এ সময়ে নানা অজুহাতে তাদের চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়াতে উৎসাহ দেওয়া হয়। তবে প্রতিষ্ঠান এ সময় পরে আবার চাকরিতে ফিরিয়ে নেয়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, কারখানাগুলোতে নারী শ্রমিকদের গালিগালাজ শোনা নিত্য-নৈমিত্তিক বিষয়। কর্মক্ষেত্রে মিড লেভেলের কর্মচারীদের দ্বারা মারধরেরও শিকার হতে হয় নারীদের। শুধু তাই নয়, চাকরি হারানোর ভয়ে যৌন হয়রানির বিষয়গুলো এড়িয়ে যান নারীরা।
নারী শ্রমিকের মতোই একইভাবে বিনা নোটিসে ঢাকা ১৩ দশমিক ৮০ এবং গাজীপুরে ২৪ দশমিক ৪০ শতাংশ শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামের ১৫ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং নারায়ণগঞ্জের ৩৪ দশমিক ৬০ শতাংশ শ্রমিককে বিনা নোটিসে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়।
যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নিম্নমানের গার্মেন্ট শ্রমিকদেরও উচ্চ ভাড়ার বাসা-বাড়িতে বাস করেত হয়। অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে ছোট পরিবারের সদস্যরা একটি ঘরে ঠাসাঠাসি করে জীবনযাপন করেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
অধিকাংশ শ্রমিকদের নিয়োগপত্র নেই। পাশাপাশি ৫০ শতাংশ শ্রমিককে মাসের ৭ তারিখের মধ্যে বেতন দেওয়া হয় না।
গবেষণা প্রতিবেদনে দেখানো হয়, ঢাকা ও গাজিপুরে ৫ শতাংশ এবং নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে ১০ শতাংশ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আওতায় রয়েছেন। ফলে তারা নিজেদের অধিকার আদায় করতে পারছেন না।
গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহমুদুল এইচ হাসান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- শ্রম প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নু।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ ওয়েজ বোর্ডের সদস্য শামসুন্নাহার ভূঁইয়া এবং বিআইএলএসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমজেএফের পরিচালক রীণা রায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
এমএফআই/টিএ