ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শেবাচিমে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু: হাসপাতালে ভাংচুর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৮
শেবাচিমে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু: হাসপাতালে ভাংচুর শেবাচিমে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু: হাসপাতালে ভাংচুর

বরিশাল: বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খাদিজা আক্তার (২৩) নামে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এতে তার গর্ভে থাকা শিশুসন্তানটিও মারা গেছে। মৃত্যুর খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে রোগীর স্বজনরা অপারেশন থিয়েটারের দরজা ভাংচুর করেন।

এ সময় রোগীর স্বজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় হাসপাতালের পঞ্চম তলার গাইনি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।

মৃত খাদিজা আক্তার ভোলা সদরের বাসিন্দা ও পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ শাকিলের স্ত্রী।

মোহাম্মদ শাকিল বাংলানিউজকে জানান, ২৬ মার্চ তার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের তারিখ ছিল। কিন্তু আজ সকালে অসুস্থ হয়ে গেলে ভোলার স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলার লেবার ওয়ার্ডে বেলা ১২টার দিকে ভর্তি করা হয়।

ভর্তির পর থেকে চিকিৎসকরা যা যা বলেছেন তাই করা হয়েছে জানিয়ে শাকিল বলেন, খাদিজার অবস্থা তেমন একটা ভালো না থাকায় বেলা ৩টার দিকে অপারেশেন নেওয়ার কথা থাকলেও তাকে নেওয়া হয়নি। অনেক অনুরোধের পর খাদিজাকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পঞ্চম তলার অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার কথা বলেন ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা।

সেখানে গিয়ে কোনো চিকিৎসক না পেয়ে তৃতীয় তলায় লেবার ওয়ার্ডে এসে চিকিৎসকদের ওপরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই। এ সময় চিকিৎসকরা দেরি করতে থাকলে তাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়। এক চিকিৎসককে ওপরে যাওয়ার জন্য টান দিলে তাৎক্ষণিক অন্য চিকিৎসকরা আমাকে মারধর শুরু করে। শত অনুরোধেও তারা আমাকে মারধর বন্ধ করে রোগীর কাছে যায়নি।  

ঘটনাচক্রে খাদিজা পেটে সন্তান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। খাদিজার মৃত্যুর খবর শুনে আমার শ্যালক রিয়াজ উদ্দিন ক্ষুদ্ধ হয়ে অপারেশন থিয়েটারের সামনের একটি দরজার গ্লাস ভেঙে ফেলে। তারপর শত অনুরোধেও শিশু সন্তানটিকেও বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি চিকিৎসকরা।

তবে এসব ইন্টার্ন ডক্টর্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার নাহিদ হাসান জানান, রোগীটি মুমূর্ষু অবস্থায় এখানে ভর্তি হয়। তার রক্তচাপ ছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে আনার। কিন্তু রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকলে জরুরি ভিত্তিতে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। তবে অপারেশনের টেবিলে ওঠানোর আগেই তার মৃত্যু হয়। যার কারণে বাচ্চাটিকেও বাঁচানো যায়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রোগীর স্বজনরা অপারেশন থিয়েটার ভাংচুর ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধর করে।  

এ বিষয়ে অপারেশন থিয়েটারে থাকা শেবাচিম হাসাপাতালের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার ফরিদা বাংলানিউজকে জানান, খাদিজা এ্যাটলামসিয়ার রোগী। তার রক্তচাপ অত্যাধিক ছিল। এ ধরনের রোগীর অবস্থা একটু ক্রিটিক্যাল হয়। চিকিৎসকদের কোনো গাফিলতি ছিল না। অপারেশনের টেবিলে ওঠানোর আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৮
এমএস/এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।