শনিবার (২৪ মার্চ) সকালে কথাগুলো বলছিলো আবিদ-আফসানা দম্পতির একমাত্র সন্তান তামজিদ বিন সুলতান মাহি। সদ্য বাবা-মাকে হারানো ১৪ বছরের মাহি মায়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু জেসরিন চৌধুরী শিউলিকে ফোনে এভাবেই তাকে দেখতে আসার জন্য বলছিলো।
জেসরিন চৌধুরী শিউলি বাংলানিউজকে মোবাইল ফোনে বলেন, আফসানাকে দাফন করার পর আমি চট্টগ্রামে চলে আসি। শনিবার সকালে মাহির খোঁজ নিতে কল করেছিলাম। সব সময় মায়ের কাছে আমার কথা শুনেছে, আমিও অনেকবার তাদের বাসায় গিয়েছি।
তিনি জানান, মাহি এখন পাইলট আবিদের ভাই ডা. খুরশেদ মাহমুদের উত্তরার বাসায় আছে। সে এখন কিছুটা ভালো আছে এবং সকালে নাস্তাও করেছে।
তিনি বলেন, পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, মাহি আগের থেকে ভালো আছে। তাছাড়া অল্পদিনের ব্যবধানে সে তার বাবা-মাকে হারিয়েছে। এখনও সে এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এই জন্যই মাহি চুপচাপ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পরিবারের সবাই এখন চাচ্ছে মাহি সবার থেকে কিছুদিন দূরে থাকুক। মা-বাবা হারানোর শোক কাটিয়ে সে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। তাই এখন কারও সঙ্গে তেমন একটা কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন প্রতিবেশি বলছেন, মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই মাহি নিস্তব্ধ। মাঝে মধ্যে নিরবে চোখের পানিতে তার বুক ভাসলেও কাউকেই সে কিছু বলছে না। এছাড়া পরিবার বা স্বজনরা কেউ চাচ্ছে না মাহিকে তার মা-বাবার মৃত্যু নিয়ে কেউ কথা বলুক। তারা চাচ্ছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় পার করে সে স্বাভাবিক জীবনে দ্রুত ফিরে আসুক।
এর আগে শুক্রবার (২৩ মার্চ ) সন্ধ্যা ৭টায় বনানীর সামরিক কবরস্থানে ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের কবরের পাশে স্ত্রী আফসানা খানমকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস২১১ এর পাইলট ছিলেন আবিদ সুলতান। ১৩ মার্চ সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবিদের মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন আফসানা।
মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণাবোধ হলে ১৮ মার্চ তাকে শেরেবাংলা নগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন জানানো হয়, তিনি স্ট্রোক করেছেন। শুক্রবার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
এমএসি/আরআর