চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলামের দাবি, এ বিষয়ে কেউ সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। তাই বিষয়টি তার জানা নেই।
অপহৃত দুই কলেজ শিক্ষক হলেন- চারঘাটের রায়পুর গ্রামের আসমত আলীর ছেলে ডাকরা ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক বজলুর রহমান এবং আস্করপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক শফিকুর রহমান উজ্জ্বল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ডাকরা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ জানান, সকালে কলেজের ক্লাস শেষে মোটরসাইকেল নিয়ে চারঘাটে যাচ্ছিলেন শিক্ষক বজলুর রহমান ও শফিকুর রহমান। তারা চারঘাট-আড়ানী সড়কের অনুপমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা কালো রঙয়ের মাইক্রোবাসে থাকা কয়েকজন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে তাদের পথরোধ করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের ওই মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়। এরপর থেকেই তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলো না। তবে সন্ধ্যার দিকে অপহৃত দুই শিক্ষকের মধ্যে বজলুর রহমান ফেরত এসেছেন।
ডাকরা কলেজের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘটনার সময় তিনি ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি দেখেন যে, একটি কালো মাইক্রোবাসে ওই দুই শিক্ষককে তোলা হচ্ছে। তাদের মোটরসাইকেলটি সেখানেই রেখে দেওয়া হচ্ছে। এতে তার সন্দেহ হলে তিনি মাইক্রোবাসের কাছে যেতেই মাইক্রোবাসের একজন তাকে হাতের ইশারায় যেতে নিষেধ করেন। এরপরই দুই শিক্ষককে মাইক্রোবাসে করে চারঘাটের দিকে নিয়ে চলে যায় তারা। মাইক্রোবাসের সামনে একটি মোটরসাইকেলও ছিলো। এ ঘটনার পর তিনি বিষয়টি কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুর রউফকে জানান।
অপহৃত কলেজ শিক্ষক বজলুর রহমানের ছোট ভাই মোজাহেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সকালে তার ভাইসহ শিক্ষক শফিকুর রহমানকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয় দিয়ে কালো মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর খোঁজাখুঁজি করেও ভাইয়ের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিলো না। কিন্তু সন্ধ্যায় তার ভাই বজলুর রহমান বাড়িতে উপস্থিত হোন। পরে তার ভাই তাদের জানিয়েছেন, কালো রঙয়ের মাইক্রোবাসে করে চোখ বাঁধা অবস্থায় নিয়ে গিয়ে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া এলাকা থেকে একটু ভেতরে ফাঁকা একটি বিলের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তিনি একাই বাড়ি এসেছেন। তবে অপর শিক্ষকের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি।
অপহৃত আরেক কলেজ শিক্ষক শফিকুর রহমান উজ্জ্বলের ছোট ভাই মিলন বলেন, তার ভাইকে ঠিক কি কারণে বা কারা উঠিয়ে নিয়ে গেছেন, কোথায় নিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না।
রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) খালিদ হোসেন বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের আটক করেনি বলে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ( র্যাব-৫) অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মাহাবুবুল আলম জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া র্যাব এমন অভিযান কখনও পরিচালনা করে না। এছাড়া ঘটনাটি সম্পর্কে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
এসএস/আরআর