এদিকে, নদীতে ছোট নৌকার জেলেদের জালে যে ক’টা ইলিশ ধরা পড়ছে তাতে খরচও উঠছে না। এখানকার জেলেরা রাত-দিন রোদ-বৃষ্টিতে নদীতে খাটলেও মিলছে না প্রত্যাশিত ইলিশ।
লক্ষ্মীপুর সদর, রামগতি, কমলনগর ও রায়পুরে প্রায় ৬০ হাজার জেলে নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। মাছ ধরতে পারলে তাদের সংসার চলে; না ধরা পড়লে তাদের চুলায় আগুন জ্বলে না। এতে তাদের না খেয়েও থাকতে হয়। পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলে পল্লিতে এখন আনন্দ নেই। ধার-দেনা করে চলছে তাদের সংসার।
স্থানীয় জেলেরা বলছেন, গত বছর এমন মৌসুমে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়েছে। কিন্তু এবার নদীতে ইলিশ খুব কম। মৌসুমের শুরুতে ইলিশ না পেয়ে তারা আশা করেছেন বর্ষায় মিলবে। কিন্তু আষাঢ়-শ্রাবণ পেরিয়ে ভাদ্রের মাঝামাঝিতেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা নেই। যে কারণে তারা সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছেন।
রামগতির বালুর চর এলাকার জেলে রইজল মিয়া বলেন, দাদনের নৌকা- জাল নিয়ে নদীতে নেমেছি। কিন্তু ইলিশের দেখা পাচ্ছি না। প্রজনন মৌসুমও ঘনিয়ে আসছে, তখন নদীতে যাওয়া যাবে না। দেনা শোধে দুশ্চিতায় আছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লুধূয়া ঘাটের কয়েকজন আড়ৎদার জানান, মাছ ধরে জেলেরা তাদের আড়তে বিক্রি করবে এমন শর্তে দাদন নিয়েছেন। নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা না পড়ায় আড়তে মাছ আসছে না। জেলেরা দেনাও শোধ করতে পারছেন না। এবার দাদনের টাকা উঠানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
কমলনগরের মতিরহাট মাছ ঘাটের সভাপতি মেহেদী হাসান লিটন বলেন, গত কয়েক বছর মেঘনা নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও এবার নদীতে গিয়ে জেলেদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। গেলো তিন চারদিন জেলেদের জালে ৮ থেকে ১০টা করে ইলিশ ধরা পড়ছে, তাতে তো খরচ উঠে না। বেশি ইলিশের আশায় মাছ ধরার স্থানীয় জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে যাচ্ছেন। ছোট নৌকাগুলো মেঘনায় মাছ শিকারে গেলেও তাদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ছে না।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্লাহ বলেন, নদীতে ডুবোচর ও নাব্যতা সংকটের কারণে ইলিশ চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়। প্রচুর বৃষ্টিপাত ও নদীতে পানি বাড়লে ইলিশ ধরা পড়ে। মৌসুমের শুরুতে ধরা না পড়লেও গত কয়েক দিন থেকে ইলিশ ধরা পড়ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৮
এসআর/জেডএস