সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কের বড় বড় গর্তে পানি জমে নালায় পরিণত হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে সাতক্ষীরা পৌরসভাসহ লাগোয়া সীমান্ত এলাকাগামী কয়েকটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ।
সরেজমিন দেখা যায়, সার্কিট হাউজ মোড় থেকে কাথন্ডা পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার সড়কে কার্পেটিং, ইট, বালু ও খোয়া উঠে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণির-পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কটির বড় বড় গর্তে পানি জমে কোথাও নালা কোথাও ‘পুকুরে’ পরিণত হচ্ছে।
এ সড়কের জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন অফিসের সামনে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সামনে, বকচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে, আগরদাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজনুর রহমানের বাড়ির সামনে, বকচরা পশ্চিম পাড়া মসজিদের সামনে, পরানদহ বাজার, বারপোতা, পয়রাডাঙ্গা, তেতুলতলা, আড়ুখালী, মৃগিডাঙ্গাসহ ঘোনা, কাথন্ডা, বৈকারী পর্যন্ত সড়কে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সড়কের কোনো কোনো স্থানে পিচের চিহ্নও নেই। পিচ ও ইট উঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। বৃষ্টি হলেই বাধে বিপত্তি। বড় বড় গর্ত ডোবায় পরিণত হয় সড়ক। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় এক যুগ সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সড়কটি। কাদা-পানিতে ভরা এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, সাইকেল, ভ্যান, ব্যাটারি চালিত চালিত ভ্যান ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
এ সড়ক দিয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভার বকচরা, মেহেদীবাগ, সবুজবাগ, শিবপুর ইউনিয়ন, ঘোনা ইউনিয়ন, বৈকারি ইউনিয়ন ও আগরদাঁড়ি ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের মানুষ চলাচল করে। কিন্তু দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
ভ্যানচালক ইয়াসিন শেখ বাংলানিউজকে বলেন, পরানদহা বাজার থেকে ভ্যানে চারজন যাত্রী নিয়ে সার্কিট হাউজ মোড়ে যেতে যেন দিন কেটে যায়। ভ্যানে মালপত্র বহন করতে আরও বেগ পেতে হয়। এখন বৃষ্টির সময় দেখবেন কিছুদূর পর পর বড় বড় পুকুরের মতো হয়ে আছে। অনেকে রাতে গাড়ি নিয়ে এসব ‘পুকুরে’র মধ্যে পড়ে।
স্থানীয় আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, অনেক দিন ধরে সড়কটি খারাপ। নানা প্রয়োজনে সব সময় শহরে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু সড়কের যা অবস্থা তাতে রোগী হাসপাতালে যাওয়ার আগেই সড়কে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
পায়রাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা কলেজছাত্রী মোমেনা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কলেজে যেতে হয়। রাস্তা এতো খারাপ যে চলাচল করা যায় না। এ ভাঙা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে না পারায় বাধ্য হয়ে শহরে হোস্টেলে থাকতে হচ্ছে। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা দরকার।
আগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজনুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ চলাচল করে। অথচ দীর্ঘদিন রাস্তাটি নষ্ট হয়ে আছে। জনগণ অভিযোগ করলেও করার কিছু নেই। রাস্তাটি এলজিইডি’র আওতায়।
শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মজিদ বাংলানিউজকে জানান, রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে খারাপ। এলাকার জনগণ সব সময় রাস্তাটি ঠিক করতে বলে। কিন্তু আমাদের করার কিছু নেই। এটা এলজিইডি’র রাস্তা। আমি কয়েকবার এলজিইডিকে রাস্তা সম্পর্কে জানিয়েছি। তারা দ্রুত সংস্কার হবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
এ ব্যাপারে এলজিইডি’র সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. শফিউল আলম বাংলানিউজকে জানান, রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে সার্কিট হাইজ থেকে চার দশমিক দুই কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করা হবে। এর জন্য এক কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া শেষ। বর্ষার পর কাজ শুরু হবে। পরে রাস্তার অন্য অংশও সংস্কার করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৮
এসআই