ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ভুয়া ডাক্তারের চিকিৎসায় চোখ হারাতে বসেছেন এক নারী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৮
ভুয়া ডাক্তারের চিকিৎসায় চোখ হারাতে বসেছেন এক নারী বাম থেকে আসমা পারভীন ও তাকে দেওয়া চিকিৎসাপত্র

মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় ভুয়া চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় দু’টি চোখের আলো হারাতে বসেছেন আসমা পারভীন (৪০) নামের এক নারী।

আসমা পারভীন বর্তমানে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সজিব উদ্দীন স্বাধীনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আসমা পারভীন উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের মাদ্রাসাপাড়ার মৃত আমিরুল ইসলামের স্ত্রী।

তার ছেলে সোহাগ বাংলানিউজকে বলেন, মায়ের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ব্যথা ও রাতে জ্বর আসার কারণে গত ২৮ আগস্ট বিকেলে তাকে বামন্দী ফাইভ স্টার ফার্মেসি ও আইডিয়াল ক্লিনিকে নিয়ে যাই। ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার মো. শরীফুল ইসলাম রোগ নির্ণয় না করে তিনশ’ টাকা নিয়ে বেশ কিছু ওষুধ লিখে দেন। তার দেওয়া ওষুধ খাওয়ার পর থেকে মায়ের মুখমণ্ডল ফুলে ওঠে। আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ হয়ে যায়। তারপর আবারো তার কাছে নিয়ে গেলে তিনি কয়েকটি এন্টিবায়োটিক ওষুধ লিখে দেন।  

মায়ের অবস্থা আরো খারাপ হওয়ায় তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সজীব উদ্দীন স্বাধীনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সজিব উদ্দীন স্বাধীন বাংলানিউজকে জানান, আসমা পারভীনের কিডনিজনিত সমস্যা রয়েছে। কিন্তু ডাক্তার নামধারী শরিফুল ইসলাম তাকে ভুল চিকিৎসা দিয়েছেন। অন্য রোগের বিভিন্ন ওষুধ দিয়েছেন। যে কারণে রোগী এখন চোখ হারাতে বসেছেন। রোগীকে রোববার (২ সেপ্টেম্বর) গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আজ (৩ সেপ্টেম্বর) সারাদিন তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কোনো উন্নতি না হলে উপযুক্ত স্থানে স্থানান্তর করা হবে।

ফাইভ স্টার ফার্মেসি ও আইডিয়াল ক্লিনিকের বৈধ কাগজপত্র ও তার ডাক্তারি কোনো সনদ আছে কিনা জানতে চাইলে শরীফুল ইসলাম বলেন, ফার্মেসি ও ক্লিনিক চালান বিভিন্ন জায়গার পয়সা দিয়ে। আর তার প্রেসক্রিপশনে ডা. মো. শরিফুল ইসলাম (এম এফ এল) লেখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি কুষ্টিয়া থেকে ১৫ দিনের একটি কোর্স করেছি।  

তবে জানা গেছে, এমএফএল নামের কোনো কোর্স নাই। তিনি নিজের কোর্সের নামটি সম্বন্ধে না জানলেও নামের আগে ডাক্তার শরিফুল ইসলাম লিখে এলাকায় হাজার হাজার লোকের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। আর তার অপচিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এলাকার লোকজন।  

মেহেরপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. জিকে সামসুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।