জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী দক্ষিণ এশিয়ার নির্বাচন কমিশনগুলোকে এ তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, ফোরাম অব ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বডিস অব সাউথ এশিয়া (ফেমবোসা) নির্বাচন কমিশনগুলোকে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।
স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ সংসদীয় গণতন্ত্রের মূলকেন্দ্র জাতীয় সংসদ। এখানে রাজনৈতিক অধিকার, মানবাধিকার নিশ্চিত করা হয়। আর গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দোরগোড়ায়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করছে।
আশাকরি, ফেমবোসার নবম সম্মেলন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে স্বচ্ছতার সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়তা করবে।
রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ফেমবোসার দু’দিনব্যাপী নবম সম্মেলনটি উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনটি আয়োজন করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ফেমবোসার চেয়ারম্যান আফগানিস্তান নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান গুলাজান আবদুল বাদি সায়েদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রথম সাধারণ অধিবেশনে ফেমবোসার বর্তমান চেয়ারম্যান স্বাগতিক বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চেয়ারম্যানশিপ হস্তান্তর করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচনে কোনো গোপনীয়তা নেই। সবই স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। সংবিধান অনুযায়ী, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দায়বদ্ধ। এজন্য আমরা ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছি। নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিচ্ছি। এছাড়া স্থানীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পর জাতীয় নির্বাচনেও ব্যবহারের প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ২০১০ সালে ফেমবোসা গঠন হয়। এরপর আটটি বছর সফলতার সঙ্গে পার করে। আশাকরি, আমাদের সবার কমন সমস্যা নিয়ে আগামীতেও সহায়তা অব্যহত থাকবে।
গুলাজান আবদুল বাদি সায়েদ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ফেমবোসা সাউথ এশিয়ার দেশগুলোর নির্বাচন বিষয়ক ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে কাজ করছে। আমাদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতাগুলো অবশ্যই ধারবাহিকভাবে বিনিময় করতে হবে। এতে আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে।
২০১০ সালে বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশের উদ্যোগে ফেমবোসা যাত্রা শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ২০১১ সালে পাকিস্তান, ২০১২ সালে ভারত, ২০১৩ সালে ভুটান, ২০১৪ সালে নেপাল, ২০১৫ সালে শ্রীলংকা, ২০১৬ সালে মালদ্বীপ এবং ২০১৭ সালে আফগানিস্তানে সংস্থাটির বাৎসরিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দেশের নামের বর্ণানাক্রমে ঘুরে এসে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে ৯ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ফেমবোসার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন স্পিকার। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম ভোট অব থ্যাংকস প্রদান করেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভুটানের নির্বাচন কমিশন সচিব দাউয়া তানজিন, ভারতের নির্বাচন কমিশনার অশোক লাভাসা, মালদ্বীপের অ্যাম্বাসেডর এশাথ শান শাকির, নেপালের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ডা. আইয়োদী প্রাশাদ জাদেভ, পাকিস্তানের ভারপাপ্ত হাইকমিশনার শাহ ফয়সাল কাকার, শ্রীলংকার নির্বাচন কমিশন চেয়ারম্যান মাহিন্দ্রা দেশাপ্রিয়াসহ বাংলাদেশের সাবেক ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনাররা।
দু’দিনব্যাপী সম্মেলন শেষ হবে বৃহস্পতিবার (০৬ সেপ্টেম্বর)।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৮
ইইউডি/জেডএস