ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া সড়কে কবে শুরু হবে নির্মাণ কাজ?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৮
ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া সড়কে কবে শুরু হবে নির্মাণ কাজ? পুরো সড়কের চিত্রই এমন, তাতে লোকজনের ভোগান্তির শেষ নেই। ছবি: বাংলানিউজ

ময়মনসিংহ: সবে মাত্র আহ্বান করা হয়েছে দরপত্র। এখন চলছে ঠিকাদার বাছাইয়ের কাজ। কার্যাদেশ পাওয়ার পরই মূলত নির্মাণ কাজে হাত দেবে ‘ভাগ্যবান’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এসবের জন্য অবশ্য অপেক্ষা করতে হবে কমপক্ষে আরো ২০ থেকে ২৫ দিন। কিন্তু ততদিনে সড়কটি আরো ভাঙবে। 

স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) দেওয়া তথ্যমতে, ক্ষতবিক্ষত ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া সড়কের সর্বশেষ আপডেট এমনই। কিন্তু বর্ষার এই দিনগুলোতে ততদিনে বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে তৈরি হবে আরো নতুন নতুন খানাখন্দের।

ছোট-বড় গর্তে সৃষ্টি হবে করুণ দশা! কঙ্কালসার হওয়া সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ; দুর্ভোগ-ভোগান্তির অন্ত থাকবে না কারোই।  

ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া সড়কের সামনের আরো ঘোর দুর্দিনের ভাবনা মাথায় রেখেই শহীদুর রহমান নামে এক সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী প্রশ্ন করলেন, ‘আর কত ক্ষতবিক্ষত হলে শুরু হবে এই সড়কের নির্মাণ কাজ। ’ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া নিয়ে গড়িমসিতে বিরক্ত শহীদুরের মতোই প্রায় সবাই।  
মঙ্গলবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চাকরি শেষে ফুলবাড়িয়া থেকে ময়মনসিংহ শহরের উদ্দেশ্যে ফেরার পথে দাপুনিয়া মধ্য বাজার এলাকায় কথা হলো তার সঙ্গে।  

স্থানীয় দাপুনিয়া মধ্য বাজার এলাকায় সড়কটির বিভিন্ন পয়েন্টে ইট-পিচ ওঠে গিয়ে স্থানে স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্তের। কোনো কোনো পয়েন্ট আবার ভেঙেচুরে কাদা-পানিতে একাকার। কোথাও বালাই নেই পিচ বা খোয়ারও।

এর ঠিক সামনে দাপুনিয়া ব্রিজের পর মাত্র ৫’শ মিটার জায়গায় ইট-বালু ফেলে কোনোমতে ঈদের আগে স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ভরাট করলেও এখন সেখানে আবারো কার্পেটিং ও ইটের প্রলেপহীন হয়ে গেছে। অর্থাৎ পুরনো সেই শোচনীয় চেহারাই যেন ফিরে পেয়েছে ‘হতভাগ্য’ ওই ৫’শ মিটার অংশ।  

স্থানীয় কাতলাসেন এলাকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক সোহরাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এই রাস্তার কসাইবাড়ি থেইক্কা (থেকে) দাপুনিয়া ব্রিজ তুরি (ব্রিজ পর্যন্ত) গাতা আর গাতা (গর্ত আর গর্ত)। কোনো কোনো এলাকায় হেইল্লা-দুইল্লা (হেলেদুলে) যাইতে অয়। ’ 

দাপুনিয়া মধ্য বাজার এলাকার মুদি দোকানি নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘কোনো কোনো সময় মনে হয় গর্তে পইরা (গর্তে পড়ে) এই বুঝি সিএনজি-অটো উইল্ট্যা (উল্টে) পড়লো। ঝাঁকুনি খাইয়া (খেয়ে) যাত্রীগর (যাত্রীদের) অবস্থাও দফারফা। কতই তো ইট-বালু ফাললো (ফেললে)। একদিনের বৃষ্টিতেই সব ধুইয়া-মুইচ্ছা (ধুয়ে-মুছে) গেলো। ’ 

ময়মনসিংহ শহরের সবচেয়ে কাছের ফুলবাড়িয়া উপজেলায় পৌঁছতে এভাবেই ঘাটে ঘাটে দুর্ভোগ-ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শত শত সাধারণ মানুষকে। তবে সবচেয়ে বেশি নাভিশ্বাস উঠেছে চাকরিজীবীদের। ভেঙে একাকার এই সড়কের কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় এলাকাবাসীও।  

গত জুন ও জুলাই মাসে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির খণ্ড খণ্ড ভোগান্তির চিত্র তুলে এনে প্রতিবেদন ছাপে বাংলানিউজ। ‘ঈদ আইলো, রাস্তা তো ঠিক হইলো না’ এবং ‘সড়ক নয় যেন পুকুর’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই সড়কটি সংস্কারে তোড়জোড় শুরু করে স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)।  

কিন্তু প্রতিবারই জোড়াতালির সংস্কারের স্থায়ীত্ব হয়নি বেশিদিন। বৃষ্টি হয়েছে তো ধুয়ে-মুছে গেছে সংস্কারের যাবতীয় নিশানা। ফলে প্রতিনিয়তই দুর্ভোগ যন্ত্রণায় মুখে মুখে অভিযোগ আর ক্ষোভ নিয়েই পথ চলতে হয়েছে শত শত মানুষকে।  

গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের বেহাল দশার পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর কী উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)? এই সম্পর্কে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত ১০ আগস্ট এই সড়কের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দু’টি প্যাকেজে প্রায় ২৬ কোটি টাকার দরপত্র। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অক্টোবরের শুরুর দিকে কাজ শুরু হবে। এই সময়টুকু সবাইকে একটু কষ্ট করতেই হবে। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৮ 
এমএএএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।