ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নদী-খাল দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৮
নদী-খাল দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি

বরিশাল: বরিশাল অঞ্চলের নদী ও খাল সুরক্ষার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনে’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন’ জাতীয় ও বরিশাল জেলা কমিটি এবং বরিশাল নদী-খাল রক্ষা সম্মিলিত পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, নদী ও পরিবেশ যোদ্ধা ও সুশিলসমাজ প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক রণজিৎ কুমার দত্ত।

সভায় অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ার সাদাত,  সহ-সভাপতি মো. রফিকুল আলম ও সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আনোয়ার হোসেন।  

এতে বক্তব্য রাখেন বরিশাল মানবাধিকার জোটের সভাপতি ডা. সৈয়দ হাবিবুর রহমান, সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ গাজী জাহিদ হোসেন, বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল ঘোষ,  মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমেদ মানিক (বীর প্রতীক), অধ্যাপক শাহ সাজেদা প্রমুখ।

বক্তারা দক্ষিণাঞ্চলের সামাজিক, পরিবেশ, অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা সুরক্ষাসহ জীববৈচিত্র্য ও মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মতে দেশের সব নদী ও খালের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ ও ভূমিকা পালনের তাগিদ দেন। কেবল পরিচ্ছন্নতা ও নামমাত্র ড্রেজিং না করে সমন্বিত উদ্যোগে মাস্টার ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদী ও খালের উৎসমুখ ও পতনমুখের পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবি তোলেন তারা।  

এছাড়াও নদী ও খাল দূষণকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া এবং দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে হলে অবশ্যই নদী প্রকৃতিকে রক্ষা করার কথা বলা হয়। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে নদী রক্ষা বিষয়ক প্রতিশ্রুতি প্রত্যাশা করা হয়।

‘বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনে’র জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ার সাদাত কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে ১৭ দফা সুপারিশ পেশ করেন।

তিনি জানান, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ এবং সিলেট থেকে যশোর পর্যন্ত ৬৪টি জেলায় নদী বাঁচানোর দাবি নিয়ে একযোগে পদযাত্রা করা হবে এবং বরিশাল বিভাগের সব জেলাতেও একই কর্মসূচি পালন করা হবে।

সভায় বরিশাল অঞ্চলের নদ-নদী ও খাল সুরক্ষায় সব ধরনের দূষণ ও দখল বন্ধে ট্রাইব্যুনাল কোর্ট গঠন, পরিবেশ বান্ধব নদী-নীতি, শক্তিশালী নদী আইন ও নির্বাহী ক্ষমতাসম্পন্ন নদী কমিশন, জাতিসংঘ পানি প্রবাহ কনভেনশন-১৯৯৭’র আলোকে উজানের অভিন্ন নদীর পানি অববাহিকা ভিত্তিক বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন, আর এস এবং সি এস পর্চা ও ম্যাপ অনুসরণ করে নদী-খালের প্রকৃত অবস্থান নির্ণয়ে জোয়ারকালীন পরিমাপ নির্ধারণ ও সীমানা পিলার স্থাপন, নদীর জোয়ারকালীন সীমানায় সব ধরনের লিজ বাতিল করে অবৈধ অবকাঠামো উচ্ছেদ, নদী-খালসমূহের উৎস ও পতনমুখসমূহে সমন্বিত উদ্যোগে মাস্টার ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানি প্রবাহ সচলকরণের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইস্তেহারে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশের কথা তুলে ধরা হয়।

এদিকে বরিশাল জেলার ঐতিহাসিক পুকুর যা দীর্ঘদিনের সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে সুরক্ষা করা সম্ভব হয়েছে, সেই স্মৃতিকে সমুজ্জ্বল রাখতে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায়  ‘জেলা পরিষদ পুকুর’ -এর সামনে থেকে একটি পদযাত্রা শুরু করে কীর্তনখোলা নদীর তীর পর্যন্ত শেষ করার ঘোষণা দেওয়া হয় সভা থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৮
এমএস/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।