ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

গণধর্ষণের অভিযোগে ইউপি সদস্যসহ গ্রেফতার ৫

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮
গণধর্ষণের অভিযোগে ইউপি সদস্যসহ গ্রেফতার ৫

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় ১৬ বছরের এক কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই কিশোরী বাদী হয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে। পরে অভিযুক্ত পাঁচজনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে ওই কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আদালতে নেওয়া হয়।

এর আগে সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে ওই কিশোরী বাদী হয়ে এক ইউপি সদস্যসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় ধর্ষণ মামলা করে।  

গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মাঈন উদ্দিন (৩৫), জয়নাল আবেদিন (২০), নজুরুল ইসলাম (২১), আনোয়ার হোসেন (২২) ও সিএনজি চালিত অটোরিকশাচালক আলমগীর হোসেন (২৩)।

পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর)  সকালে উপজেলার চরসাহাভিকারী এলাকার ১৬ বছরের কিশোরী বাড়ি থেকে বের হয়ে ১০ টাকা কেজির ওএমএস’র চাল কেনার জন্য কাজীরহাট থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তাকিয়াবাজার এলাকার বগাদানা ইউপি কার্যালয়ে যায়। চাল নিয়ে সেখান থেকে অটোরিকশায় করে বাড়ির উদ্দেশে রওয়না হয় সে। পথে তাকিয়াবাজার-কাজীরহাট সড়কের আলমপুর এলাকায় চালক হঠাৎ অটোরিকশাটি থামিয়ে দেন। সেখানে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে থাকা তিন যুবক এগিয়ে এসে চালকের সহযোগিতায় কিশোরীকে জোর করে একটি বিদ্যালয় সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে কিশোরী অচেতন হয়ে পড়ে। ওই তিন যুবকের সঙ্গে পরে আরও দুই যুবক যোগ দেন। পরে কিশোরী চিৎকার শুরু করলে তারা কিশোরীকে অটোরিকশায় তুলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিছু দূর যাওয়ার পর চালকসহ পরে আসা দুই যুবক অটোরিকশার ভেতরে কিশোরীকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে কিশোরী অটোরিকশা থেকে লাফিয়ে একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার মা-বাবাকে জানায় সে। পরে তার পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় ইউপি সদস্য মাঈন উদ্দিনকে বিষয়টি অবগত করেন এবং এ ঘটনায় থানায় মামলা করার জন্য তার কাছে পরামর্শ চান।

কিশোরীর বাবার ভাষ্য, ইউপি সদস্য মাঈন তাদের (ভুক্তভোগী) বাড়িতে এসে বিষয়টি তিনি নিজে সমাধান করবেন বলে থানায় যেতে নিষেধ করেন। পরে তারা থানায় যেতে চাইলে মাঈন বাধা দেন। মামলা করলে আরও বড় ধরনের ক্ষতির হুমকি দিয়ে তাদের বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা তিনি।

কিশোরীর বাবা বলেন, মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ইউপি সদস্য মাঈন ওই বখাটে যুবকদের তাদের বাড়িতে ডেকে এনে শালিস বসায়। কারও কোনো কথা না শুনে মাঈন ধর্ষকদের নাকে খত ও চড়-থাপ্পড় দিয়ে ভবিষ্যতে এমন কাজ আর না করার কথা বলে শালিস বৈঠক শেষ করেন। ইউপি সদস্যের এমন বিচার তারা মেনে নেননি।

কিশোরী জানায়, ইউপি সদস্যের হুমকির ভয়ে তারা ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর থেকে মঙ্গলবার ১১ সেপ্টেম্বর  সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি। পরে রাতে পরিবারের সবাই বাড়ি থেকে বের হয়ে লুকিয়ে থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করে।  

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৫২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮

এসএইচডি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।