বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা একথা বলেন।
মুক্তিযোদ্ধা বৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দীন সিরাজ, মুক্তিযোদ্ধা, সিলেট বিভাগীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধা বৃত্তি প্রকল্পের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এক পবিত্র বন্ধন। ভারত সরকার এই ভূমির বীর ‘ছেলে-মেয়েদের’ আত্মদানকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্মরণে এবং দেশের একটি উন্নত ভবিষ্যতের লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের অমূল্য অবদানকে সম্মান জানাতে কয়েকটি কল্যাণমূলক উদ্যোগ এবং প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে, সব মুক্তিযোদ্ধার জন্য পাঁচ বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা, অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতে সশস্ত্র বাহিনীর হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও নতুন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান বৃত্তি প্রকল্প। এসব প্রকল্পের পাশাপাশি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড আয়োজিত বিজয় দিবস উদযাপনে অংশগ্রহণের জন্য প্রত্যেক বছর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্রতিনিধি দলকে কলকাতায় আমন্ত্রণ জানানো হয়।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ভারত সরকার ২০০৬ সালে প্রথম মুক্তিযোদ্ধা বৃত্তি প্রকল্পটি চালু করেছিল এবং ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন প্রকল্পের ঘোষণা দেন। এই প্রকল্পগুলি একত্রিত হলে ভারত সরকার মোট ৫৬ কোটি টাকা ব্যয় করবে। ভারত সরকার স্নাতক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অধ্যয়নরত মুক্তিযোদ্ধা উত্তরাধিকারীদের শিক্ষা সহায়তা হিসেবে বৃত্তি দেবে। এ বৃত্তি প্রকল্প থেকে ২১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী সরাসরি উপকৃত হয়েছে।
তিনি বলেন, একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণের লক্ষ্যে আপনাদের বাবা এবং পিতামহরা মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগ করেছিলেন। তারা তাদের প্রচেষ্টায় সফলতা অর্জন করেছেন এবং এখন তাদের 'সোনার বাংলা' নির্মাণের স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আপনাদের।
ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, ভারত সরকারের ‘ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার’ এবং 'প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা' ও ‘ডিজিটাল ভারত’-এর মতো কিছু ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প অনুযায়ী এই বৃত্তি প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। ভারত সরকারের এই প্রকল্পগুলোর মতো পরের বছর থেকে বৃত্তির পরিমাণ শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি হস্তান্তর করা হবে। এই প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য সুবিধাভোগীদের শ্রম লাঘব ও এ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ভারত সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। গত কয়েক বছরে আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। এ বছর আমরা সিলেটে আমাদের নতুন সহকারী হাইকমিশন অফিস চালু করেছি। আমাদের নতুন সহকারী হাইকমিশনার আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। আমাদের নতুন অফিস সিলেটের জনগণের জন্য দ্রুত ভিসা প্রদানে সহায়তা করবে। এটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও সিলেটের মধ্যে পর্যটন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে।
সিলেট বিভাগ ভারতের আসাম, মেঘালয় এবং অন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির প্রবেশপথ। বাংলাদেশের দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতি এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির উন্নয়নে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী একে অপরের পরিপূরক হতে পারে-যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
টিআর/আরআর