শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ছয় দফা দাবি ছাড়াও মালিকপক্ষ ও চা-শ্রমিক নেতাদের ঘোষিত এই সর্বনিম্ন মজুরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে জানান চা শ্রমিকসহ ছাত্র সংগঠনগুলো।
তাদের দাবি, মজুরি নির্ধারণের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নিম্নতম মজুরি তিন হাজার টাকা ঘোষণা করতে হবে।
সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র-যুব কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজিত বাড়াইক ছয় দফা দাবি তুলে ধরে বলেন, অবিলম্বে চা শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ৩শ টাকা করা, স্থায়ী বসতভিটার বন্দোবস্ত, পাঁচ কেজি চালের সমপরিমাণ সাপ্তাহিক রেশন চালু করা, চা বাগানগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, মা ও শিশুর নিরাপদ স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা, চা বাগান থেকে মাদক নির্মূল করার দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় চা ছাত্র সংসদ ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে সিলেট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম বলেন, ভিক্ষা চাইতে আসিনি, মেহনতি মানুষের শ্রমের মজুরি চাইতে রাস্তায় এসেছি। শ্রমিকের দাবি ন্যূনতম ৩শ টাকা মেনে নিতে হবে। নইলে আগামী নির্বাচনে শ্রমিকরা আপনাকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দেবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সিলেট চ্যাপ্টারের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গত ৪২ মাসে মজুরি বেড়েছে মাত্র ১৭ টাকা অথচ ৩শ টাকা শ্রমিকের মজুরির প্রস্তাব করা হয়েছে। দুই বছরে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। অথচ শ্রমিকের মজুরি করা হলো ১০২ টাকা। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে শ্রমিকেরা। ৩শ টাকার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয় চা ছাত্র সংসদের সভাপতি রাজু কুর্মীর সভাপতিত্বে চা শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা প্রণব জ্যোতি পাল বলেন, চা শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো নির্ধারণের জন্য গঠিত মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষের সুপারিশে গত ২০ আগস্ট চা শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ১০২ টাকা ঘোষণা করেছে।
গোয়াইনঘাট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক চিত্ররঞ্জন রাজবংশী বলেন, ১০২ টাকার যে মজুরি ঘোষণা করেছে তার মধ্যে বেড়েছে মাত্র ১৭ টাকা। যা প্রমাণ করে মজুরি বোর্ড শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৪১ নম্বর ধারায় উল্লেখিত মানদণ্ড কিংবা আইএলও কনভেনশন ১৩১ এর মজুরির মাপকাঠিকে কোনো মূল্য দেয়নি।
সমাবেশে শ্রমিক ও ছাত্র সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতারাসহ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৮
এনইউ/এএ