ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক থেকে ভারতবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে আসছে। কূটনৈতিক প্রথা অনুযায়ী ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের কাজ হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন।
ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের অফিসিয়াল ফেসবুক ঘেটে দেখা যায়, সেখানে প্রায়ই ভারতবিরোধী বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হয়। গত ১৫ জুলাই দেশটির হাইকমিশনের ফেসবুকে ক্লাসিফাইড জার্নাল নামের অপর একটি ফেসবুক পেজের ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। সেই ভিডিও শেয়ারের পোস্টে ভারতের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরংকে সিআইএ থেকে ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে হাইকমিশন। ভিডিওতে ভারতের বজরং সদস্যদের মিছিল করতে দেখা যায়।
গত ২৭ জুন পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ‘থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী নারীদের যৌন হয়রানি ও শারীরিক নির্যাতনে বিশ্বের শীর্ষে রয়েছে ভারত। ’ হাইকমিশন এ উদ্বৃতির পক্ষে পাকিস্তানের একপ্রেস টিব্রিউন পত্রিকার একটি প্রতিবেদনের লিংক শেয়ার করেছে।
২৩ জুন পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে বলা হয়, ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৫ নাগরিক নিহত হয়েছেন। আর ডজনখানেক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। হাইকমিশন তার বক্তব্যের সপক্ষে পাকিস্তানের নেশন পত্রিকার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন শেয়ারও করেছে।
২৪ মে ঢাকার কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান হাইকমিশন দুটি ছবি পোস্ট করেছে। সেখানে একটি ছবিতে একটি ছোট মেয়ে কাটা তার পেরিয়ে চলেছে। অপর ছবিতে একই জায়গা একটি গরুকে কাটা তার পার হতে দেখা যায়। পাকিস্তান হাইকমিশন ছবির বিষয়ে মন্তব্য করেছে, ‘কাশ্মীরে মানুষ চলাচলে বাধা থাকলেও গরুদের চলাচলে কোনো বাধা নেই। ’ তবে ছবিটি কোথায়, কোন স্থান ও কবে তোলা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
এভাবে একের পর এক ছবি ও তথ্য দিয়ে ভারতবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে চলেছে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন । পাকিস্তানের হাইকমিশনের অফিসিয়াল পেজে লাইক দিয়েছেন প্রায় ৭৮ হাজার মানুষ। এদিকে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনেরও একটি অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ রয়েছে। সেই ফেসবুক ঘেটে দেখা যায়, সেখানে পাকিস্তানবিরোধী কোনো প্রচারণা নেই। ভারতীয় হাইকমিশনের অফিসিয়াল পেজের লাইক রয়েছে প্রায় ২ লাখ ৭৬ হাজার।
নাক গলানো নতুন কিছু নয়:
অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের নাক গলানো নতুন কিছু নয়। পাকিস্তান শুধু ভারতের বিষয়েই নয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়েও বরাবরই নাক গলিয়ে আসছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলে সেই বিচারের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার সরাসরি অবস্থান নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলো। এ নিয়ে দুই দেশের হাইকমিশনারকে তলব ও পাল্টা তলবের ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগও রয়েছে। ২০১৫ সালে জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি ফারিনা আরশাদকে দেশটি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলো।
পাকিস্তান দূতাবাস বক্তব্য দেয়নি:
পাকিস্তান দূতাবাস থেকে ভারতবিরোধী প্রচারণার বিষয়ে দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ বিষয়ে তারা খুব শিগগিরই একটি বক্তব্য দেবে। তবে এক মাস পেরিয়ে গেলেও পাকিস্তান হাইকমিশন এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮
টিআর/এসএইচ/এমজেএফ