ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ঢামেক জরুরি বিভাগের টিকিট বিক্রির অর্থ লুট, দুদকে মামলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
ঢামেক জরুরি বিভাগের টিকিট বিক্রির অর্থ লুট, দুদকে মামলা

ঢাকা: এবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরি বিভাগের টিকিট বিক্রির অর্থ (৫৯ লাখ ১০ হাজার ৬শ’ ১ টাকা) আত্মসাতের অভিযোগে ৬টি পৃথক মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এসব মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক নূরুল ইসলাম।

অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- ১. আজিজুল হক ভুইয়া, ইনচার্জ জরুরি বিভাগ (বরখাস্ত), বর্তমানে-প্রশাসনিক সংযুক্তি; (২) মো. আলমগীর হোসেন, সাবেক এমএলএসএস, বর্তমানে ক্যাশিয়ার; (৩) মো. আ. বাতেন সরকার, সাবেক এমএলএসএস, বর্তমানে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর; (৪) মো. শাহজাহান, সাবেক অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক ও ক্যাশিয়ার, জরুরি বিভাগ, বর্তমানে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ব্লাড ব্যাংক শাখা; (৫) মো. আবু হানিফ ভুইয়া, সাবেক এমএলএসএস, বর্তমানে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এবং (৬) মো. হারুনর রশিদ, অফিস সহকারী, জরুরি বিভাগ, বর্তমানে ফর্ম শাখা।

দুদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী আজিজুল হক ভুইয়া, জরুরি বিভাগ থেকে টিকিট নিয়েছেন মোট ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৬৬৮টি। ওই টিকিট থেকে তিনি ৮১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৮৫ টাকার টিকিট বিক্রি করেছেন। কিন্তু সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন ৬৬ লাখ ১৫ হাজার ৯৩০ টাকা। বাকি ১৫ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৫ টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। অপরদিকে তিনি জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তি বাবদ আদায় করেছেন ৩৮ লাখ ৩৮ হাজার ২২৭ টাকা। কিন্তু সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন ২৩ লাখ ৪৭ হাজার ২৮১ টাকা। এক্ষেত্রে তিনি ১৪ লাখ ৯০ হাজার ৯৪৬ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া তিনি টিকিট গ্রহণ ও রোগীদের মধ্যে বিক্রির দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে টিকিট বিক্রির টাকা জমা রেজিস্টারসহ অন্যান্য রেকর্ডপত্র বিনষ্ট করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। অর্থাৎ তিনি মোট ৩০ লাখ ৫০ লাখ ৬০১  টাকা আত্মসাৎ এবং সংশ্লিষ্ট আলামত বিনষ্ট করায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজুর অনুমোদন দিয়েছে দুদক।

একইভাবে মো. শাহজাহান, ঢাকায় জরুরি বিভাগে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় গত ২০০৯-২০১০ সাল পর্যন্ত ১৫ হাজার টিকিট গ্রহণ করে রোগীদের মধ্যে বিক্রয় করেছেন। কিন্তু বিক্রি থেকে পাওয়া (প্রতিটি টিকিটের মূল্য ১০ টাকা হিসেবে) ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা কোন খাতে জমা করেছেন তার কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যা থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে টিকিট বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুদক।

অন্যদিকে আবু হানিফ ভুইয়া জরুরি বিভাগে  ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালনের সময় গত ২০০৯-২০১০ সাল পর্যন্ত ২৮ হাজার  টিকিট  রোগীদের মধ্যে বিক্রি করেছেন। কিন্তু  বিক্রির টাকা (প্রতিটি টিকিটের মূল্য ১০ টাকা হিসেবে) ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা কোন খাতে জমা দিয়েছেন তার কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। টিকিট বিক্রির মোট ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাত করায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুদক।  

একইভাবে হারুণ অর রশিদ জরুরি বিভাগে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় গত ২০০৯-২০১০ থেকে ২০১২-১৩ সাল পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার টিকিট রোগীদের মধ্যে বিক্রি করেছেন। এ থেকে প্রাপ্ত ১১ লাখ ৫০ হাজার  টাকা কোন খাতে জমা দিয়েছেন তার কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে টিকিট বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করায় তার বিরুদ্ধে মামলা রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।  

আলমগীর হোসেন, সাবেক এমএলএসএস, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকায় জরুরি বিভাগে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ২০১০-২০১২  সাল পর্যন্ত ২৮ হাজার  টিকিট  রোগীদের মধ্যে বিক্রি করে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা টাকা আত্মসাৎ করায় একটি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুদক।  

এছাড়াও আব্দুল বাতেন সরকার, সাবেক এমএলএসএস, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকায় জরুরি বিভাগে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় গত ২০০৯-২০১০ সাল পর্যন্ত ১ লাখ রোগীর মধ্যে বিক্রি করেছেন। কিন্তু গ্রহণকৃত টিকিট রোগীদের মধ্যে বিক্রির ১০ লাখ টাকা কোন খাতে জমা দিয়েছেন তার কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে টিকিট বিক্রির ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
আরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।