ঢাকা, শনিবার, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মনোনয়নের নামে প্রতারণার ফাঁদ, ধরা পড়লেন ছাত্রলীগ নেতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৮
মনোনয়নের নামে প্রতারণার ফাঁদ, ধরা পড়লেন ছাত্রলীগ নেতা রাজশাহীতে আটক ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ

রাজশাহী: কথায় আছে 'চোরের দশ দিন, গৃহস্থের একদিন'। আর সেই দিনটি আসলো শুক্রবার (০৫ অক্টোবর)। এদিন গভীর রাতে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বেল ঘরিয়া মধ্যপাড়া থেকে ‘উচ্চমানের’ এক প্রতারককে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা।

আটক প্রতারক হচ্ছেন উপজেলার বেলঘরিয়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে সাজ্জাদ আলী। এসময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, দুই রাউন্ড গুলি ও নগদ দুই লাখ ৯৬ হাজার ৯৯ টাকা জব্দ করেছে র‌্যাব-৫ এর সদস্যরা।

 

সাজ্জাদ আলী জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক পদেও রয়েছেন।  
 
শনিবার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী র‌্যাব-৫ এর সদর দফতরে তাকে সাংবাদিকেদের সামনে হাজির করা হয়। পরে তার তথ্য জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম।

তিনি বলেন, সাজ্জাদ আলী নিজেকে কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী প্রেস সচিব আফসার সিদ্দিকী বিটু, কখনও এপিএস সাইফুজ্জামান শেখর, আবার কখনও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। তিনি এসব পরিচয়ে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি ও মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের ফোন দেন। মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মিষ্টি খাওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করে আসছিলেন। একমাস থেকে এ প্রতারণা শুরু করে সাজ্জাদ আলী।  

এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার আওয়ামী লীগের ১৪ জন মন্ত্রী, এমপি ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যক্তিদের কাছ থেকে বেশ কয়েক লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন। ইসলামী ব্যাংকের তার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ওই টাকার সন্ধান মিলেছে। কেবল তাই নয়, সাজ্জাদ আলী পুলিশ, রেলওয়েসহ বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নাম করেও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।

সম্প্রতি সাজ্জাদ লালমনিরহাট এলাকার মনোনয়নয়ন প্রত্যাশী এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। না হলে মনোনয়ন পাবেন না বলে জানিয়ে দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই নেতা ঢাকা র‌্যাব হেড কোয়ার্টারে অভিযোগ করেন। পরে র‌্যাব তার অনুসন্ধানে মাঠে নামে। এক পর্যায়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীর সঙ্গে কথা বলার সময় কথোপকথন রেকর্ড করে র‌্যাব। এছাড়া তার ওই মোবাইল নম্বরটি ট্র্যাক করা হয়। পরে দেখা যায় তার লোকেশন রাজশাহীর দুর্গাপুরে। সেখানে বসেই সাজ্জাদ সারা দেশের মন্ত্রী, এমপি এবং মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা করছিল।  

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, সাজ্জাদ আলী রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক পদে রয়েছেন। এক সময় রেলওয়েতে চাকরিও পেয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে চাকরি যাওয়ার পর প্রতারণার এ ফাঁদ পাতেন সাজ্জাদ। মিথ্যা পরিচয়ে বিভিন্ন দফতরে তার মনোনীত ব্যক্তিকে মনোনয়নপ্রতাশী ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিভিন্ন পদে চাকরি দিতেও চাপ প্রয়োগ করছিল সাজ্জাদ। র‌্যাব হেড কোয়ার্টারে তথ্যে শুক্রবার দিনগতগত রাত দেড়টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে সাজ্জাদ আলীকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়।

তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হবে। এছাড়া প্রতারণার বিষয়টিও এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে বলেও জানান র‌্যাব-৫ এর অধিনায়ক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৮
এসএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।