ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ইলিশ ধরতে মানা, জেলেদের ‘ছুটি’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৮
ইলিশ ধরতে মানা, জেলেদের ‘ছুটি’ ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মেঘনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় নৌকাগুলো নদী সংলগ্ন খালে নোঙর করে রাখা হয়েছে। ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর মেঘনা উপকূলীয় জেলা। এখানকার প্রায় ৬০ হাজার জেলে নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা চালায়। তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান নেই। মাছ ধরতে না পারলে অলস সময় কাটে। 

৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুম। মেঘনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা।

মা ইলিশ ডিম ছাড়ার নির্ধারিত এ ২২ দিন জেলেরা নদীতে যাবেন না, জাল ফেলবেন না। এখন তাদের ‘ছুটি’।

শনিবার (৬ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন মেঘনায় জেলেদের নৌকা দেখা যায় না। ঘাটে নেই মাছ, জেলে, ব্যবসায়ী ও আড়াতদাররা। নেই উপচেপড়া ভিড়। নৌকাগুলো নদী সংলগ্ন খালে নোঙর করা। জেলেদের দেখা গেছে, চা-সিগারেটের দোকানে গল্পে-আড্ডায়। আবার কেউ কেউ নৌকায় ঘুমিয়ে। এসব দেখলে সত্যিই মনে হবে জেলেদের ‘ছুটি’।  

৭ অক্টোবর  থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় সব প্রজাতির মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ সময় মাছ শিকার, পরিবহন, মজুদ ও বাজারজাতকরণ অথবা বিক্রি নিষিদ্ধ। এ আইন আমান্য করলে জেল অথবা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।  

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট এলাকার কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাছ শিকারে যাবেন না। ২২ দিন তাদের ‘ছুটি’। নিষেধাজ্ঞা শেষে ফের মাছ শিকারে যাবেন মেঘনায়। এর মধ্যে তারা নৌকা-ট্রলার মেরামত ও জাল তুনাসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ ঠিকঠাক করে নেবেন।

এদিকে, মা ইলিশ রক্ষা সফল করতে প্রশাসন বিভিন্ন প্রদক্ষেপ নিয়েছে। তৎপর রয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা, ভ্রাম্যমাণ আদালত, মৎস্য দপ্তর, কোস্টগার্ড ও পুলিশ।  

গত কয়েকদিন থেকে প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ জেলে, ব্যবসায়ী ও আড়াতদারদের সচেতন করতে মেঘানাপাড়ে কয়েকটি সভা করেছে।  

এছাড়া লিফলেট, পোস্টার ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জেলেসহ সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করেছেন। বরফ কলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, অন্য কোথাও থেকে বরফ আসতে না দেওয়া, নদী সংলগ্ন খাল থেকে নৌকা বের হতে না দেওয়া, মাছঘাট সংলগ্ন বাজারের নৌকা ও ট্রলারের জ্বালানি তেলের দোকান বন্ধ রাখা, নদীর মধ্যে জেগে উঠা চরের মাছঘাটগুলো বন্ধ রাখাসহ নানা প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এমন সব তৎপরতায় জেলেদের মধ্যে ভয় ও সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে।  

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিস থেকে জানা গেছে, আশ্বিন মাসের বড় পূর্ণিমার আগের চার দিন, পূর্ণিমার দিন ও পরের ১৭ দিনসহ মোট ২২ দিন ইলিশের প্রজনন সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ এসে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ডিম ছাড়ে। একটি বড় ইলিশ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম ছাড়তে পারে। বেশি ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যে নিবিঘ্নে যাতে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারে সে জন্যই ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।  

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্লাহ বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকায় মাছ ধরা যাবে না। এ আইন আমান্য করলে ১ বছর থেকে ২ বছরের জেল অথবা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৮
এসআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।