ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

৫শ’ থেকে ৫ হাজার টাকায় অপরাধীদের সিম সরবরাহ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৮
৫শ’ থেকে ৫ হাজার টাকায় অপরাধীদের সিম সরবরাহ আটক তানভীরুর রহমান ও তৌফিক হোসেন খান-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: ব্যক্তিপর্যায়ে সিম কেনার ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জাতীয় পরিচয়পত্র ও বায়োমেট্রিক প্রয়োজন। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে কর্পোরেট সিম ইস্যু করতে শুধু সংশ্লিষ্ট একজনের নামেই প্রয়োজনীয় সবগুলো সিম রেজিস্ট্রেশন করা হয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বাড়তি সিম ইস্যু করে বাইরে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র।

মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোনের এক কর্মকর্তা ও পরিবেশকের যোগসাজসে গড়ে ওঠা এ চক্রের সরবরাহ করা সিমগুলো পৌঁছে যেত সাধারণত অপরাধীর হাতে। আর এসব সিম ব্যক্তিভেদে ৫শ’ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হতো।

**অবৈধভাবে সিম বেচায় গ্রামীণফোনের কর্মকর্তা-পরিবেশক আটক

শনিবার (৬ অক্টোবর) রাতে মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রামীণফোনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (বিজনেস সেলস) সৈয়দ তানভীরুর রহমান (৩৫) ও পরিবেশক তৌফিক হোসেন খান পলাশকে (৩৮) আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)।

এসময় তাদের কাছ থেকে ৫৫৩টি সিম, বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশনের কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ও নয়টি ট্যাব উদ্ধার করা হয়।

রোববার (৭ অক্টোবর) দুপুরে কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) এডিশনাল ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।

তিনি বলেন, গ্রামীণফোনের দুইটি নাম্বার থেকে এক শ্রীলঙ্কান নাগরিকের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয় মর্মে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ভাষানটেক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পরে এ বিষয়ে তদন্তে উক্ত নাম্বারগুলো মাইক্রোকডেস ইনফরমেশন নামে একটি কোম্পানির নামে রেজিস্ট্রেশন করা দেখা যায়। যা তৌফিক হোসেন খান পলাশের মালিকানাধীন মোনাডিক বাংলাদেশ নামে একটি ডিসট্রিবিউশন হাউজের মাধ্যমে ইস্যু করা হয়, আর এই ডিসট্রিবিউশন হাউজের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন গ্রামীণফোন কর্মকর্তা তানভীরুর।

মাইক্রোকডেস ইনফরমেশন কোম্পানির অনুমতি ছাড়াই সিমগুলো অ্যাকটিভ করা হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে তৌফিক ও তানভীরুরকে আটক করা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর বিভিন্ন তথ্য।

আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ সিও বলেন, তারা বিভিন্ন বৈধ কোম্পানির নামে প্রয়োজনের চেয়ে বাড়তি সিম ইস্যু করতো। তারপর সেগুলো ব্যক্তিগতভাবে লাভের আশায় বাইরে উচ্চমূল্যে বিক্রি করতো। এসব সিম সাধারণত অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী ও অপরাধীরা ব্যবহার করে।

প্রাথমিকভাবে ৪২টি কোম্পানির অধীনে ৮৬৭টি অবৈধ সিম অ্যাক্টিভ পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তৌফিক সাধারণত সিমগুলো বিভিন্ন কোম্পানির নামে ইস্যু করে ক্লিয়ারেন্স পাঠাতেন আর তানভীরুর সিমগুলো অ্যাক্টিভেট করতেন। অ্যাক্টিভেট ৮৬৭টি সিম কোথায়, কে ব্যবহার করছেন বিষয়গুলো তদন্তাধীন।

এ চক্রের সঙ্গে জড়িতরা যত ক্ষমতাধরই হোক সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৮
পিএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।