আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের মধ্য দিয়ে বিএনপির নৈতিক পরাজয় হয়েছে। কারণ দলটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ওপর বর্বোরচিতভাবে গ্রেনেড হামলা চালায়।
এটা তারা অস্বীকার করতে চাইলেও রায়ের মধ্য দিয়ে সেই সত্যটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপি যে একটি সন্ত্রাসী দল, রায়ের মধ্য দিয়ে সেটা প্রমাণ হয়েছে। বিষয়টি বিএনপির নেতাদের উপলব্ধিতেও এসেছে। এ কারণে বিএনপি মাঠে নামার নৈতিক সাহসও পায়নি।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, এ রায়ে আওয়ামী লীগ পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হলেও আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে তারা মনে করেন। নির্বাচনের আর মাত্র দুই মাস বাকি। এ সময় আদালতের রায়ে প্রমাণ হলো বিএনপি রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে বর্বর পৈচাশিকতা চালিয়েছিলো।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় প্রকাশ্য দিবালোকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুদ্ধে ব্যবহৃত মারণাস্ত্র আর্জেস গ্রেনেড বিস্ফোরণের মাধ্যমে হামলা চালানো হয়।
আদালতের এ পর্যবেক্ষণের ভিতর দিয়ে বিএনপির প্রকৃত চেহারা আবার ফুটে উঠেছে এবং প্রমাণ হয়েছে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মন্তব্য করেন।
তারা বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাস নির্ভর দল, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরেই এটা বলে আসছে। এখন আদালতে সেটা প্রমাণ হলো। এই পরিস্থিতিতে এ দল সম্পর্কে দেশের মানুষের নতুন করে ভাবতে হবে। আগামী নির্বাচনে এমন একটি সন্ত্রাসী দলকে তারা ভোট দেবে কি না সেটা নিশ্চয়ই মানুষ ভাববে। বিএনপির ওপর এর একটা বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, গ্রেনেড মেরে একটা রাজনৈতিক দলকে নেতৃত্বশূন্য করে দেওয়ার চেষ্টা বিশ্বের ইতিহাসে কোথাও নেই। বিএনপি যে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না, আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে এটা মানুষের কাছে নতুন করে ফুটে উঠেছে। বিএনপি যে একটি সন্ত্রাসী দল, আদালতের পর্যবেক্ষণে সেটা প্রমাণ হয়েছে। আগামী নির্বাচনে নিশ্চয়ই মানুষ চিন্তা করবে এমন একটি সন্ত্রাসী দলকে তারা ভোট দেবে কি না। এ রায়ে বিএনপির রাজনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করে এই বিচারের রায় সঠিক হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা যে দল ঘটায় তারা দেশের জন্য, দেশের মানুষের কিছু করতে পারে না। এ রায় নিয়ে কিছু করতে গেলে বিএনপি অবশ্যই জনসমর্থন পাবে না। তারা যদি এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে চায় তাহলে জনগণের কাছ থেকেই উপযুক্ত জবাব পাবে। আমার মনে হয় বিষয়টি বিএনপির নেতারাও উপলব্ধি করেছেন। এ কারণেই তারা মাঠে নামতে পারেননি। কারণ সেই নৈতিক সহস তাদের নেই।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে আসছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার- এগুলো আইনের শাসন প্রতিষ্ঠারই অংশ।
দীর্ঘ ১৪ বছর পর গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারের রায়ের মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের দায় বিএনপি কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। এটা আদালতও বলেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। এর আগে কানাডার আদালতে প্রমাণ হয়েছে। এখন বিএনপিকে আর রাজনৈতিক দল বলার সুযোগ নেই। আগামী নির্বাচনে নিশ্চয়ই জনগণ সচেতনতার সঙ্গে বিচার করে ভোট দেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৮
এসকে/এমজেএফ