ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

'শ্রমিকদের উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ'

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৮
'শ্রমিকদের উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ' অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: শ্রমিকদের উন্নত ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে এ মহতী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর তেরখাদিয়া এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের পেশাগত অনেক জটিল রোগ হয়।

এসব রোগের চিকিৎসা সাধারণ হাসপাতালে দেওয়া সম্ভব হয় না। অনেক সময় রোগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণাও পাওয়া যায় না। এ সব পেশাগত রোগ সম্পর্কে গবেষণা এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং শ্রমিকদের সচেতনতা বাড়াতে এ ইনস্টিটিউট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এসময় তিনি পেশাগত রোগের চিকিৎসায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে ৩শ’ শয্যার একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।

মুজিবুল হক বলেন, এ ইনস্টিটিউটে শ্রমিক-মালিক এবং মিড লেভেল ম্যানেজমেন্টের বিভিন্ন বিষয়ে আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও, সুইডেন, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ড সরকার কারিগরি সহায়তা এবং ট্রেইনারসহ সার্বিক সহযোগিতায় আগ্রহপ্রকাশ করেছে।

তিনি বলেন, শ্রমিক দুর্ঘটনা, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য  বাংলাদেশে এটিই প্রথম ইনস্টিটিউট। আশপাশের দেশগুলোর মধ্যে ভারতে শুধু এ ধরণের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাকি নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। ফলে এসব দেশের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের জন্য শ্রম সংশ্লিষ্ট লোকজন এখানে প্রশিক্ষণ নেবেন বলে আশা করা যায়।  

আর রাজশাহীতে এ ইনস্টিটিউট স্থাপনের মাধ্যমে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।

এর আগে রাজশাহী পৌঁছেই গবেষণা ও ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

অনুষ্ঠানে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এ ইনস্টিটিউটটি থেকে শুধু জাতীয় নয়, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে রাজশাহীর জন্য উন্নয়নের আরও একটি নতুন মাত্রা যোগ হলো।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বিকক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। আমরা তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাবো। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও শেখ হাসিনা সরকারকে নির্বাচিত করতে হবে। তাহলে আশা করছি ২০৪১ সাল নয়, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশে পরিণত হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রাজশাহী-২ (সদর) সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আশরাফ শামীম, কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক শামসুজ্জামান ভূঞা, সেনা কল্যাণ সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী কর্ণেল এবিএম মিজানুর রহমান, রাজশাহী চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ'র সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি, জাতীয় শ্রমিক লীগ রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোহেল। স্বাগত বক্তব্য দেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শিবনাথ রায়।

উল্লেখ্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ১৯ বিঘা জমির ওপর শিল্প কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের পেশাগত দুর্ঘটনা, রোগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকার ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশের রাজশাহীতে প্রথম এ ইনস্টিটিউট নির্মিত হতে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে রাজশাহীর বাঘার তুহিন মাহবুব নামের এক শিক্ষার্থী বুয়েটে ভর্তি সুযোগ পাওয়ায় তাকে শ্রম ও কর্মসংস্থানের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১৮
এসএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।