ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মেধাবী তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে কনা-প্রতীকের সুরের মূর্ছনা

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৮
মেধাবী তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে কনা-প্রতীকের সুরের মূর্ছনা গান গাইছেন কন্ঠশিল্পী প্রতীক ও কনা। ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: অন্য রকম এক আবহ। বর্ণিল আলোয় ঝলমলে মঞ্চে সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডুলী। দীর্ঘ অপেক্ষার বাঁধ ভাঙলো। নিচ থেকে মাইক্রোফোন হাতে ওপরে ওঠে এলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা।

শ্রোতাদের হৃদয়ে গেঁথে থাকা ‘ধিমতানা’ দিয়েই শুরু করলেন হালের এই সুগায়িকা।

গানের তালে নেচে নেচে একে একে গেয়ে শোনাতে থাকলেন ‘রেশমি চুড়ি, দহন মুভিতে ইমরানকে নিয়ে গাওয়া ‘প্রেমের বাক্স দিবো খুলে’, ‘দিল দিল তোকে ছাড়া বাঁচা মুশকিল’, পোড়ামন-২’র গান ‘ওহি শ্যাম তোমারে আমি নয়নে নয়নে’ গানগুলো।

কনার সামনে তখন মেধাবী তারুণ্যের বাঁধভাঙা এক উচ্ছ্বাস। গানে গানে তাদের ভাসিয়ে দিচ্ছেন সুরের ভেলায়। নিজের কন্ঠে জনপ্রিয় ‘হেইল্ল্যা দুইল্ল্যা নাচ, আমি ডানা কাটা পরী, দিন কাটে না, সেলফি সেলফি, মিলন হবে কতদিনে, অহ ডিজে গান উপহার দিয়ে শীতের রাতে রীতিমতো উষ্ণতা ছড়িয়ে দিলেন এই লাস্যময়ী।

আর ততক্ষণে তিল ধারণের ঠাঁই নেই অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামের (টাউন হল) মাঠে। গানের ফাঁকে চললো কথামালাও। জানালেন, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আগেও দু'বার এসেছেন তিনি। শ্রীপুরের মেয়ে হওয়ায় ময়মনসিংহের মাঝে নিজেকে খোঁজে পান। ’ সঙ্গীতানুষ্ঠানে তরুণীদের উচ্ছ্বাস।  ছবি: অনিকখানকনার মতোই ঘণ্টাখানেকের জন্য সুরের মূর্ছনা আর জাদুতে তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে তাদের অভিভাবকদেরও বন্দি করলেন আরেক জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী প্রতীক হাসান। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সবাই উপভোগ করলেন তাদের পরিবেশনা। নিজেরাও মুগ্ধতা ছড়িয়েই প্রস্থান করলেন মঞ্চ থেকে।

চলতি বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ১২শ’ কৃতি শিক্ষার্থীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে ঘিরে শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) দিনগত রাতে অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামের মাঠে আয়োজন করা হয় এই সঙ্গীতানুষ্ঠানের। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম প্রশাসক মো. ইকরামুল হক টিটু সপ্তমবারের মতো এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

এর আগে ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র থাকাকালীন তিনি ছয়বার দীপ্তিময় মেধাবীদের উৎসাহ ও প্রণোদনা যোগাতে এমন নজরকাড়া সংবর্ধনা দেন।

শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনের সকাল থেকেই তারণ্যের মিছিল যেন মিশে গিয়েছিলো অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে। সংবর্ধনার পাশাপাশি তারা আয়োজনের ষোলকলা পূর্ণ করেন গানের ছন্দে মাতোয়ারা হয়ে।

বাবা খালিদ হাসান মিলুকে বলা হতো ‘স্বর্ণকন্ঠ’ শিল্পী। বাবার মতো করেই নিজেকে গড়ে তুলছেন ছেলে প্রতীক হাসান। অকাল প্রয়াত ওই গুণী শিল্পী’র যোগ্য উত্তরসূরীই বলা হচ্ছে প্রতীককে। ময়মনসিংহ নগরীর সংগীত পিপাসুদের সামনে নিজের এমন যোগ্যতারই ডানা মেলে ধরলেন তিনি।   

নিজের বাবার কন্ঠের কালজয়ী দু’টি গান ‘অনেক সাধনার পরে আমি পেলাম তোমার মন’, ‘সেই মেয়েটি’ শুনিয়ে প্রথমেই নস্টালজিক করে তোলেন শ্রোতাদের। এরপর বাবার মতোই ‘বেয়াইন সাব’, লোকাল বাস, তুমি তলে তলে টেম্পু চালাও, গার্ল ফ্রেন্ডের বিয়া, গ্রামের নওজোয়ান গেয়ে দর্শকের মন জয় করলেন।

শীতের রাত মাতিয়ে বাবা’র বন্ধুকে স্মরণ করে তবেই মঞ্চ মঞ্চ থেকে নামার সিদ্ধান্ত নিলেন প্রতীক হাসান।

‘তুমি কেন বুঝো না’ তার কন্ঠে তোলার আগে একদমেই যেন বলে গেলেন শৈশবের স্মৃতি। ‘নন্দিত ব্যান্ড তারকা’ ও গিটার লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু আমার বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই আমি তার গান শুনতাম। তিনি আমাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। আমি বলবো শিল্পীদের মৃত্যু হয় না। গানের মাঝেই তারা বেঁচে থাকেন যুগ-যুগান্তর।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৮
এমএএএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।