ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনায় দিনে কড়া রোদের তেজ, রাতে তীব্র শীত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৯
খুলনায় দিনে কড়া রোদের তেজ, রাতে তীব্র শীত খুলনার সাত রাস্তার মোড়ে ছিন্নমূল মানুষের কাগজ পুড়িয়ে শীত তাড়ানোর চেষ্টা।

খুলনা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বদলে যাচ্ছে ঋতুচক্র। শীত তার প্রচলিত সময়ের নিয়ম মানছে না। দু’দিন আগে যেখানে দিন-রাতে শীতের উপস্থিতি বেশি ছিলো। সেখানে অল্প সময়ে সেটির ব্যাপক পরিবর্তন।

খুলনায় দিনে কড়া রোদের তেজে গরম, আর সন্ধ্যার পরই কুয়াশা ও তীব্র শীতের কামড়। দিনে গরম, রাতে শীতের কারণে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রভাব বাড়ছে।

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) মাঘের তিনদিন হলেও  খুলনায় দিনে তেজময় রোদে গরমের রেশ থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই বাড়তে শুরু করেছে শীতের তীব্রতা।  

দিনের বেলায় ভ্যাপসা গরমে অনেকে চালাচ্ছেন ফ্যান। আবহাওয়ার এ বৈরী আচরণে হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।

মধ্যবিত্ত আর নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে কাঁথা-কম্বল আর শীতের কাপড় দিয়ে রাতে ঠাণ্ডা তাড়ালেও হতদরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে শীত সীমাহীন কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউবা কাগজ, গাছের শুকনা পাতা, খড়-কুটা পুড়িয়ে শীত তাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

সরেজমিনে খুলনা মহানগরীর বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সন্ধ্যার পর তীব্র শীতে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। তীব্র শীত থেকে রক্ষা পেতে পথের ধারে খড়-কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শীত তাড়াতে দেখা গেছে অসহায়দের। মাঘ মাসের দিনে ও রাতের আবহাওয়ার পরিবর্তনে সাধারণ মানুষ ও তাদের জীবন আচারণেও পরিবর্তন আনছেন।

খানজাহান আলী রোডের রসুল নামে এক রিকশাচালক বাংলানিউজকে বলেন, কালে কালে তো শীত গরম সব আসে যায়। এখনকার কালে দিনের বেলাতে গরম থাকে তাই শীতের কাপড় নিয়ে রাস্তায় আসি না। রাতে আবার ঠাণ্ডা পড়ে। রিকশাতে শীতের কাপড় রাখার জাগা (জায়গা) নেই। তাই নিয়ে আসতে পারি না। রাতের ঠাণ্ডায় বেশি খন (সময়) গাড়ি চালাতি পারি না। এ ক্যামন মাঘ মাস বলে হেসে দেন তিনি।

খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বুধবার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মাঘ মাসের দিনেও রোদের তেজ কড়া। এর কারণে দিনে কিছুটা গরম পড়ছে। এছাড়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে খুলনা অঞ্চলে। এ কারণে রাতে প্রচন্ড শীত অনুভুত হচ্ছে।

তিনি জানান, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, মাদারীপুর, রংপুরের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই কারণে সকাল ও রাতে বেশি শীত পড়ছে। তার সঙ্গে রয়েছে উত্তরে হালকা বাতাস। তবে দিনে সূর্য কিরণ উজ্জ্বল থাকার কারণে দিনের বেলায় গরম অনুভূত হচ্ছে।

আমিরুল আজাদ  বলেন, খুলনায় আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্র ৯ দশমিক ৫ এবং সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ৮ সেলসিয়াস। খুলনা বিভাগের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক১ সেলসিয়াস। যশোরে আছে ৭ দশমিক ৪ সেলসিয়াস।

এদিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলমান থাকায় বোরো বীজতলার কোল্ড ইঞ্জুরি, আলুর আর্লি ব্লাইটসহ ডাল ফসলের নানা শীতজনিত রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে এরই মধ্যে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘণ্টা,  জানুয়ারি ১৭, ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।