ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নিখোঁজের ৪ মাস পর ক্ষতবিক্ষত কিশোরী উদ্ধার, আটক ১

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯
নিখোঁজের ৪ মাস পর ক্ষতবিক্ষত কিশোরী উদ্ধার, আটক ১

নোয়াখালী: নোয়াখালীর হাতিয়ার ছানন্দী ইউনিয়নের চরনোঙ্গলিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় চার মাস পর ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় রাহেনা আক্তার (১৪) নামে এক কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহ সুমন নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তবে ঘটনার মূলহোতারা এখনো পলাতক রয়েছেন।

রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের নিচে থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারের লোকজন। রাহেনা চরনোঙ্গলিয়া গ্রামের এনায়েত উল্যার মেয়ে।

ভিকটিমের মা সামছুন নাহার অভিযোগ করে বলেন, প্রায় চার মাস আগে প্রতিবেশী জামাল উদ্দিনের মেয়ে রিনা আক্তার আমার বাড়িতে এসে নেশা জাতীয় দ্রব্য দিয়ে রাহেনাকে অচেতন করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। রাহেনাকে দেখতে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেন। রিনা বাড়ি থেকে রাহেনাকে নিয়ে গেছে বলে তার বড় ছেলের শাশুড়ি তাকে জানান। তবে রিনা তা অস্বীকার করে।

তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে আরও বলেন, নিখোঁজের কয়েকদিন পর রাহেনা একটি অপরিচিত নম্বর থেকে তাকে কল দিয়ে বলে ‘মা আমি রাহেনা’ এ কথা বলার পরই কল কেটে যায়। এরপর থেকে তারা রাহেনার আর কোনো সন্ধান পাননি। রোববার গভীর রাতে পুনরায় একটি অপরিচিত নম্বর থেকে তার কাছে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি কল দিয়ে রাহেনার বিষয়টি অবগত করলে রাতেই তারা চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের নিচ থেকে মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাহেনা জানায়, রিনার মামী আলেয়া আক্তার তার মাইজদীর বাসায় রেখে তাকে প্রচণ্ড মারধর করতো। বিনা কারণে ও তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে আলেয়া তাকে নির্যাতন করতো। শরীরে কখনো গরম পানি ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হতো। সর্বশেষ শরীরে এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যথা ও যন্ত্রণায় কান্নাকাটি করলে মুখে কাপড় গুজে দিয়ে মারধর করতো। খাবারও দিতো না। সারা শরীরে পচন ধরে গন্ধ বের হলে রোববার রাতে একটি গাড়িতে করে তাকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের কাছে ফেলে যায় তারা।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম বাংলানিউজকে জানান, ভিকটিম ও পরিবারের তথ্যমতে, তার শরীরে এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার শরীরের প্রতিটি অংশে ক্ষত রয়েছে। তাই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভিকটিমকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, তিনি হাসপাতালে গিয়ে ভিকটিমকে দেখে এসেছেন। প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে সুমন নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৯
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।