ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কেমিক্যালের কারণেই আগুন ছড়িয়েছে: ফায়ার সার্ভিস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯
কেমিক্যালের কারণেই আগুন ছড়িয়েছে: ফায়ার সার্ভিস ব্রিফ করছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল এস এম জুলফিকার রহমান/ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভবনগুলোতে কেমিক্যালের উপস্থিতি ছিল কি না এ নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় ও ফায়ার সার্ভিসের পৃথক বক্তব্যের মধ্যে আবারও কেমিক্যালের উপস্থিতির কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কমিটির সদস্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লে. কর্নেল এস এম জুলফিকার রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভবনের ভেতরে গ্যাস লাইটার রিফিলের পদার্থ ছিল।

এটা নিজেই একটা দাহ্য পদার্থ। এছাড়া আরও অন্যান্য কেমিক্যাল ছিল। প্রত্যেকটা জিনিসই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেছে। পারফিউমের বোতলে রিফিল করা হতো এখানে। সেই বোতলগুলো ব্লাস্ট হয়ে বোমের মতো কাজ করেছে।

বৃহস্পতিবার চকবাজারের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছিলেন, 'পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাসায়নিক গুদামের কোনো সম্পর্ক নেই, ওই ভবনে কোনো রাসায়নিক গুদামও নেই'।

শিল্পমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, অবশ্যই কেমিক্যাল ছিল। যা যা ছিল, সেগুলো এক ধরনের কেমিক্যাল। আমি এ নিয়ে মন্তব্য করবো না, তিনি এমন বক্তব্য কোন পরিপ্রেক্ষিতে দিয়েছেন তা জানা নেই। ক্যামিকেলের জন্যই আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লেগেছে বেশি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির অপর সদস্যরা হলেন প্রফেসর ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী (পুর কৌশল বিভাগ-বুয়েট), প্রফেসর ড. ইশতিয়াক আহমেদ (পুর কৌশল বিভাগ-বুয়েট), মো. আসাদুজ্জামান (অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী-ডিএসসিসি), মো. জাফর আহম্মেদ (অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী-ডিএসসিসি), মো. সিরাজুল ইসলাম (প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ-ডিএসসিসি), মো. নুরুল ইসলাম (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-রাজউক), মো. শাহ আলম (পরিচালক-রাজউক) ও সদস্য সচিব মুন্সী মো. আবুল হাসেম (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী-ডিএসসিসি)।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটির সদস্যদের দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনসহ দুর্ঘটনার সার্বিক বিষয় সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবে এ কমিটি।

অন্যদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুরক্ষাসেবা বিভাগ সংশ্লিষ্ট জরুরি কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে। কন্ট্রোল রুমটির সার্বিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী। কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রম চলবে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত।

১২ সদস্যের আরেকটি কমিটি ঘোষণা করছে শিল্প মন্ত্রণালয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিজুল হককে প্রধান করে এ কমিটি করা হয়। কমিটিকে পাঁচদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ওই ঘটনায় অবহেলার অভিযোগ এনে অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জন পুড়ে মারা যায়। চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আবাসিক ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯
পিএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।