সাত সদস্যের বিচারক প্যানেলের প্রধান হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তার সঙ্গে রয়েছেন, ঢাবির সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, ড. নুরুল আমিন বেপারী, ড. মহসিন রশীদ, ড. আনিসুর রহমান খান, প্রফেসর দিলারা চৌধুরী ও ড. আসিফ নজরুল।
গণশুনানিতে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ধানের শীষের প্রার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া গত নির্বাচনে যারা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতা শোনা হবে। ঐক্যফ্রন্ট ছাড়াও বেশ কয়েকটি দলের প্রার্থীদের দাওয়াতপত্র দেওয়া হলেও সকাল দশটা নাগাদ অন্য কোনো দলের কাউকে গণশুনানিতে দেখা যায়নি। ২০দলীয় জোটের শরীক জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রার্থী গণশুনানিতে আসেননি। তবে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান পিরোজপুর-২ আসনে
ইতোমধ্যেই এ গণশুনানিতে উপস্থিত হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণ স্বাস্থ্যনগর কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদীন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. রেজা কিবরিয়া, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, পিরোজপুর-২ আসনের প্রার্থী লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরীও উপস্থিত আছেন।
ঠিক সকাল দশটায় কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে গণশুনানি শুরু হয়। এরপর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও আহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
এসময় তিনি বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর দেশে তথাকথিত একটি প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকার কারণে দেশে যা ইচ্ছা তাই করছে সরকার। তাকে কোনো কিছুর জন্য জবাবদিহি করতে হয় না।
সকাল দশটায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের কারণে সময় কমিয়ে আনা হতে পারে বলে জানান মির্জা ফখরুল।
গণশুনানির শুরুতে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা বিচারক না, কোনো বিচার করার ক্ষমতা আমাদের নাই, কর্তব্যও নাই। শুনানি হচ্ছে গণশুনানি, জনগণের উদ্দেশে এরা বক্তব্য রাখবেন। বিচার যেটা হচ্ছে সেটা ট্রাইব্যুনালে হবে। আর গণআদালত যেটা বলা হয় সেটার বিচার জনগণ করবে। আমরা এসেছি অনুষ্ঠানটা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হোক, সেজন্য। যে বক্তব্যগুলো আসবে সেগুলো পরে প্রকাশ করা হবে। বই আকারেও প্রকাশ করা হবে। সবার বক্তব্য রেকর্ড করা হবে।
তিনি বলেন, এ গণশুনানির মূল উদ্দেশ্য সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। সংবিধানে আছে, 'দেশের জনগণ এই দেশের মালিক'। ভোটাধিকার রক্ষা করার জন্য আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধ করে জয়ী হয়েছিলাম। সংবিধানের ৭ম অনুচ্ছেদে লেখা আছে জনগণ ক্ষমতার মালিক। এবার যে নির্বাচন হয়েছে, সেটা নিয়ে প্রার্থীদের অনেকে ট্রাইব্যুনালে মামলা আকারে ফাইল করেছে। দলের নেতাদের ধারণা হলো নির্বাচনের পদ্ধতি কি ঘটেছে সেটা জনগণকে জানানো দরকার। জনগণ যারা ক্ষমতার মালিক হিসেবে ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চেয়েছিলেন, তাদের জানানো উচিত। নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা, কি ঘটেছিল। কোর্টে যেটা হবে, মামলা ফাইল করা হয়েছে, সেটা হবে। কিন্তু জনগণ ক্ষমতার মালিক হিসেবে তাদেরও জানানো দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯
এমএইচ/এসএইচ