ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশালে স্কুলে দুদক পরিচয়ে চিঠি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
বরিশালে স্কুলে দুদক পরিচয়ে চিঠি

ব‌রিশাল: বরিশালের বিভিন্ন স্বনামধন্য সরকারি-বেসরকারি স্কুলে কোচিং বাণিজ্য ও অনিয়ম বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচয়ে চিঠি দিয়েছে অজ্ঞাতরা।

আর অজ্ঞাতদের দেওয়া এ চিঠি পাওয়া স্কুলগুলোর শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিভাগীয় কার্যালয়ের নামে ইস্যু করা এ চিঠির বিষয়ে জানে না দুদক কর্তৃপক্ষ।

 

সূত্র জানায়, দুদক পরিচয়ে বরিশাল শহরের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বরাবর চিঠি পাঠানো হচ্ছে। প্রতিটি স্কুলেই ডাকের মাধ্যমে এ চিঠি   পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। চিঠিগুলোতে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ, ভর্তির সময় বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে তিনদিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

চিঠিগুলো পাওয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ কোচিংবাজ শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তারা দুদক পরিচয়ে পাওয়া ওই চিঠি নিয়ে ছুটছেন দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ে। স্মরণাপন্ন হচ্ছেন দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, সরকারি জেলা স্কুল, বরিশাল উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা দুদকের নামে দেওয়া ওই চিঠি পেয়েছেন।  

এরমধ্যে বরিশাল উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর দেওয়া একটি চিঠিতে দেখা যায়, চিঠি প্রেরক হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয় উল্লেখ করা হয়েছে। ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বন্ধ করা ও সরকার নির্ধারিত টাকার অধিক বার্ষিক ভর্তি ফি গ্রহণ প্রসঙ্গের’ বিষয় উল্লেখ করে দেওয়া চিঠিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি স্মারকও রয়েছে।

দুদক বরিশাল বিভাগীয় পরিচালের পক্ষে বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত) কর্মকর্তা নামের একজনের স্বাক্ষরও রয়েছে ওই চিঠিতে। এর অনুলিপি দেওয়া রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও শিক্ষা অফিসসহ ছয়টি দফতরে।

উদয়ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার শ্যামুয়েল সবুজ বালা বলেন, দুদক পরিচয়ে যে চিঠি আমাদের কাছে এসেছে, তা নিয়ে দুদক বরিশাল বিভাগীয় পরিচালকের সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনো চিঠি তারা দেননি। তাই ভুয়া চিঠি দিয়ে আমাদের হয়রানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমাদের স্কুলের পক্ষ থেকে দুদককে লিখিত আবেদন করেছি। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

অপরদিকে বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা হোসেন বলেন, এ ধরনের একটি চিঠি আমরাও পেয়েছি। চিঠিতে বিশেষ ক্লাস বন্ধ ও সরকারি আয়-ব্যয়ের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে যে চিঠি আমরা পেয়েছি, সেটা ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক বলে মনে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বিষয়টি দেখছেন।

এ প্রসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. জুলফিকার আলী জানান, বিভিন্ন স্কুলে দুদকের নাম ব্যবহার করে চিঠি দুদক থেকে দেওয়া হয়নি। কারা দিয়েছে তাও বলা যাচ্ছে না। এটি সম্পূর্ণ ভূয়া বিষয়। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
এমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।