প্রত্যেক মা-বাবা তাদের সন্তানদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ও আতঙ্কে থাকেন। অনেকে এ নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে সর্বশেষ নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে ১১ দিন বয়সের শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ।
নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, শিশুটি অপহরণ হয়নি। শিশুর বাবা কাশেম ও খালা ঝর্ণার যোগসাজশে সাজানো নাটক উপস্থাপন করে থানায় সাধারণ ডাইরি (জিডি) করেন। অথচ তারা জান্নাতুল বেগম নামে তাদের এক আত্মীয় কাছে শিশুটিকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন।
তিনি বলেন, শিশু উদ্ধারের জন্য পুলিশের তৎপরতা দেখে নিজেদের ভেতরে ভীতি সৃষ্টি হলে শিশুকে ব্যাগ করে বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে রেখে যেতে আসেন। এসময় শিশুর বাবা কাশেম, খালা ঝর্ণা ও সহযোগী শিউলী আক্তারকে আটক করে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এরআগে বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিনগত মধ্যরাতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সামিউল আলম ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র নাফিজ তানভীর নাফিকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার করে। সামিউল নেত্রকোণা শহরের সাতপাই পশ্চিমপাড়ার মৃত আব্দুল্লাহ্র ছেলে এবং নাফিজ মোক্তারপাড়া মসজিদ কোয়াটার এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে।
অপরদিকে একই দিনগত রাত ৮টার দিকে নেত্রকোণা শহরের সাতপাই স্টেশন থেকে ক্রিয়েশান কিন্ডারগার্টেনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রিফাত হাসান জয়কে উদ্ধার করা হয়। জয় শহরের কাটলি এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
ওসি বলেন, গত ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন থেকে রাত পর্যন্ত ভিন্ন সময়ের মধ্যে শিশু নিখোঁজের ঘটনাগুলো ঘটে। এগুলো নিয়ে নেত্রকোণা মডেল থানায় পৃথক পৃথক সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়েছে।
পরবর্তীতে খবরগুলো জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশু অপহরণের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু উদ্ধারের পর স্কুল পড়ুয়া শিশুরা জানায় বিদ্যালয়-প্রাইভেটে অতিরিক্ত পড়ার চাপ ও মা-বাবার বকুনিতে ঘর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে অজানার উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়েছিল তারা।
নেত্রকোণা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব চৌধুরী প্রত্যেক শিশুদের বাবা-মাকে তাদের সন্তানের প্রতি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, অতিরিক্ত কোনো কিছু কারও জন্য মঙ্গল ডেকে আনে না। এ ঘটনাগুলো থেকে সবাইকে ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
জিপি