রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় বিএসএমএমইউ'র ডা. মিল্টন হলে ওবায়দুল কাদেরের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
তিনি বলেন, শারীরিক অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকার কারণে সিঙ্গাপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে।
সংবাদ সম্মেলনে কাদেরের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ওনার অবস্থা নিয়ে আশাবাদী। হয়তো তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। আবার নাও হতে পারেন। ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা না পেরোলে অবস্থা সঠিকভাবে বলা সম্ভবই না। সকালে যখন তিনি হাসপাতালে আসেন তখন তার হার্টবিট বা হৃস্পন্দন বন্ধ ছিল। সে সময় থেকে এখন পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। তাই আমরা আশাবাদী।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ'র কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসান।
কীভাবে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা প্রণালী শুরু থেকে সম্পন্ন হয়েছে সে বর্ণনা দিতে গিয়ে অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসান আরো বলেন, সকালে সাড়ে ৭টার দিকে তাকে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন তার হৃদস্পন্দন বন্ধ ছিলো। আমাদের একজন চিকিৎসক ফোন পেয়ে তার বাসায়ও গিয়েছিলেন। ৮টার সময় তার হার্টবিট আসলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা শুরু হয়। তখন ভেন্টিলেশন ও ওষুধ দেওয়া হয়।
‘এরপর ক্যাথল্যাবে নিয়ে দেখা যায়, তিনটি রক্তনালী একেবারে ব্লক। এরমধ্যে একটি শতভাগ ও অন্য দু’টি ৮০ শতাংশ ও ৯৯ শতাংশ। তখন সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল ব্লক নালীটা খোলার ব্যবস্থা করি। প্রাইমারি পিসিআই (রিং পরানো) করার পর তিনি প্রায় দু’ঘণ্টা ভালো অবস্থায় ছিলেন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে আবার অবস্থা খারাপ হয়। হার্টবিট প্রতি মিনিটে ৩৫ আরপিএম-এ নেমে যায়। আবারো ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য হার্টবিট শূন্য ছিল। তখন প্রেসার ঠিক করার জন্য আইইডিপি (প্রেসার স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা) দেই। এখন হার্টবিট ৯০ থেকে ১১০ আরপিএম-এ আছে। ’
প্রধানমন্ত্রী আসার পর ব্লিংকিং (চোখের পাতা নাড়ানো) এবং রাষ্ট্রপতি আসার পর চোখ মেলে তাকিয়েছেন ওবায়দুল কাদের উল্লেখ করে সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী এসে তাকে ডাক দেওয়ার পর তার ব্লিংকিং হচ্ছিলো। এছাড়া রাষ্ট্রপতি এসে তাকে ডাক দিলে তিনি চোখ মেলে তাকিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এসে ডাক দেওয়ার পর তার পা নড়ছিল। এ থেকেই রেসপন্সের মাধ্যমে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি বাহ্যিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে।
পরবর্তী চিকিৎসা কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চিকিৎসকরা বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তিনি রিপারফিউশন ইনজুরিতে আছেন। এই অবস্থার রোগীদের ক্ষেত্রে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। রিং পরানোর পর ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রোগীকে একই অবস্থায় রাখতে হয়। ওবায়দুল কাদেরের ক্ষেত্রে এরপর দুটো চিকিৎসা হতে পারে। সেগুলো হলো- করোনারি মেডিকেল থেরাপি ও বাইপাস অপারেশন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৯
এমএএম/ডিএসএস/এজেডএস/এএ