সোমবার (০৪ মার্চ) সকাল থেকে পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রধান ফটকের সামনে ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন ক্রীড়া সামগ্রী নিয়ে বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখায় তারা।
জেলা সমাজ সেবা কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য আনা নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত তারা এখানে অবস্থান করবে জানিয়ে, খেলার মাঠ রক্ষায় তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সমাজ সেবা বিভাগের উপ-পরিচালক শাহাপাড় পারভীন ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখানে অফিস কমপ্লেক্স নির্মাণ না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর শিশু-কিশোরীরা তাদের বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নেয়।
স্থানীয় ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী তানজিলা আক্তার বলেন, কেন্দ্রের মধ্যে এতবড় অফিস ভবন নির্মাণ করা হলে আমাদের খেলাধুলাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে। নিরাপত্তা ঝুকিতে থাকতে হবে আমাদের।
শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের উপ-প্রকল্প পরিচালক শুভংকর ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে জানান, ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের উদ্ধোধন করেন। ২০১৬ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ খাতের আওতায় সরকারি কর্মসূচির আদলে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কার্যক্রম চলছে।
বরিশালে এ কার্যক্রমের আওতায় সোমবার পর্যন্ত ৯৪ জন সুবিধাবঞ্চিত ও আইনি সাহায্যপ্রার্থীসহ ১৪ ক্যাটাগরির শিশু-কিশোরীর বসবাস। এর আগে একটি ভাড়া বাড়িতে তাদের কার্যক্রম চলতো। তারা সেখানে বন্দি জীবন কাটাতেন।
২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর রূপাতলীতে সমাজ সেবা বিভাগের অব্যবহৃত স্থাপনা ও জমিতে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। সেখানে খেলার মাঠসহ সুপরিসর জায়গা রয়েছে। তবে এখানে বালিকাদের (মেয়ে) একটি ডরমেটরির ৫টি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা হলেও ৯২ জন বালক (ছেলে) শিশু-কিশোরদের এখনও ভাড়া ভবনেই থাকতে হচ্ছে।
সম্প্রতি ওই স্থানে জেলা সমাজসেবা বিভাগের বহুতল অফিস কমপ্লেক্স নির্মাণের টেন্ডার হয়। সোমবার সকালে ঠিকাদারের লোকজন মালামালসহ কমপ্লেক্স নির্মাণ করতে আসলে শিশু-কিশোরীরা তাদের খেলার মাঠ রক্ষার্থে কেন্দ্রের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে শেখ রাসেল এর ছবি এবং বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
সমাজ সেবা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহাপাড় পারভীন বলেন, রূপাতলীতে সমাজ সেবা বিভাগের জায়গায় জেলা অফিস কমপ্লেক্স নির্মাণের টেন্ডার হয়েছে। ভবনের প্ল্যানসহ সাইট প্ল্যান পাস হয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদার মালপত্র এনেছে। এতে শিশুরা তাদের খেলার মাঠ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় করছে।
তিনি বলেন, শিশু-কিশোরীরা দুপুরের খাবারগ্রহণ না করে বিক্ষোভ করছিলো। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে শান্ত করে খাবার খাওয়ানের ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে যাবো। এ নিয়ে আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবো। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই শিশুদের দাবি এবং কমপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৯
এমএস/ওএইচ/